ছবিঃসংগৃহীত |
মুক্তিযোদ্ধার স্বীকৃতি চান একাত্তরে সরব যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসীরা।একাত্তরে ‘বাংলাদেশের পক্ষে জনমত গঠনে ভূমিকা রাখায়’ মুক্তিযোদ্ধা স্বীকৃতি চান কয়েকজন যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী।
গত বছর ১৯ জুলাই যুক্তরাজ্য প্রবাসী ১২ জনকে এক প্রজ্ঞাপনে বীর মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে স্বীকৃতি দেয় মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়। তারপর থেকেই স্বীকৃতির দাবি নিয়ে সক্রিয় রয়েছেন বেশ কয়েকজন যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী।
এ বিষয়ে ওয়াশিংটন ডি.সিতে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত এম শহীদুল ইসলাম বলেন, “যুক্তরাজ্যের রেফারেন্সে আমরা সরকারকে অনুরোধ জানাতে পারি। তবে তার আগে কংক্রিট একটি তালিকা দরকার।”সেই তালিকার সন্ধানে যোগাযোগ করা হয় একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের সমর্থনে রাজপথে এবং কংগ্রেসে নানা তৎপরতার পাশাপাশি অস্ত্রভর্তি জাহাজ আটকে দেওয়ার মতো দুঃসাহসী কর্মসূচিতে অংশ নেওয়া কয়েকজন প্রবাসীর সঙ্গে।
ফিলাডেলফিয়ায় নোঙর করা পাকিস্তানি এক জাহাজ অবরোধের পর ভেতরে ঢুকে ১৩ জন নাবিককে নামিয়ে এনেছিলেন ‘বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব দেলওয়ারে ভ্যালি’-এর সে সময়ের প্রেসিডেন্ট মাযহারুল হক। সেই নাবিকেরা পরবর্তীতে ফিলাডেলফিয়াতেই বসতি গড়েন।
পেশায় প্রকৌশলী মাযহারুল হক বলেন, “আমরা ফিলাডেলফিয়া ও ওয়াশিংটন মেট্রো এলাকার নানা র্যালি-জনসংযোগে অংশ নিয়েছি। সিনেটে কথা বলেছি। আমাদের কর্মসূচির সমর্থনে রাজপথে সরব হয়েছিলেন বিভিন্ন ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থী এবং শিক্ষকেরাও। এক পর্যায়ে আমার প্রয়াত স্ত্রী ফরিদা খানম তার সবগুলো শাড়ি দিয়েছিলেন শিক্ষার্থীদের। সেসব পরে ওরা বাঙালি হিসেবে র্যালিতে অংশ নেপাকিস্তানি পতাকায় অগ্নিসংযোগ করার স্মৃতিচারণ করে নিউ ইয়র্কে সস্ত্রীক বসবাসরত আব্দুর রাজ্জাক খান বলেন, “সেসময়ে আইডাহো থেকে নির্বাচিত ইউএস সিনেটর ফ্র্যাঙ্ক চার্চ (আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিষয়ক কমিটির সদস্য) আমাদের মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে এতটাই সমর্থক ছিলেন যে এক পর্যায়ে তার অফিস ব্যবহারের সুযোগ দিতেও কুণ্ঠা করেননি। শুধু তাই নয়, এই সিনেটরের চেষ্টায় ১৯৭১ সালে সিনেটে একটি সংশোধনী বিল পাশ হয়েছিল। তারপর বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের বিরুদ্ধে পাক হায়েনাদের আর কোন অর্থ সহায়তা সম্ভব হয়নি। ”
আব্দুর রাজ্জাক খান আরও জানান, আমার স্ত্রী জাকিয়া খান তখন ভয়েস অব আমেরিকার সাংবাদিক। তিনিও যোগ দিয়েছিলেন র্যালিতে। এটা জেনে কর্তৃপক্ষ তাকে সাবধান করেছিলেন। কিন্তু তাকে দমাতে পারেনি।
নব্বই বছর বয়সী মাযহারুল হক বলন, “সেসময় শিকাগো, বস্টন, লস অ্যাঞ্জেলেস প্রভৃতি স্থানের প্রবাসীরাও নানা কর্মসূচি পালন করেছেন। স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের পরিধি আরও বিস্তৃত এবং জোরালো করার অভিপ্রায়ে উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন একটি যন্ত্র ক্রয় করেছিলাম। সেটি এয়ার ইন্ডিয়া এয়ারলাইন্স বিনা ভাড়ায় কলকাতায় নিয়ে গেলেও পশ্চিমবঙ্গ সরকার তা স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রে কাছে হস্তান্তর করেছে কিনা নিশ্চিত হতে পারিনি
সূত্রঃবিডিনিউজ২৪.কম