নিখোঁজ মুক্তিযোদ্ধার ভাতা আত্মসাৎ: সৎ ভাতিজার বিরুদ্ধে অভিযোগ
শরীয়তপুরের নড়িয়ায় নিখোঁজ মুক্তিযোদ্ধা আলী আজম বেপারীর মুক্তিযোদ্ধা ভাতা আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে তার সৎ ভাতিজা তাওহীদ ইসলাম রাফিন বেপারী (২১) এর বিরুদ্ধে। অভিযোগ রয়েছে, তথ্য গোপন করে মুক্তিযোদ্ধা মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের ম্যানেজ করে তিনি সোনালী ব্যাংক থেকে এককালীন কয়েক লাখ টাকা উত্তোলন করেছেন। এ ঘটনায় এলাকায় অন্যান্য মুক্তিযোদ্ধাদের মধ্যে সমালোচনার ঝড় উঠেছে।
রাফিনের জন্মদাতা পিতা মোয়াজ্জেম হোসেন বেপারীও একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা। শরীয়তপুরের নড়িয়া উপজেলার বিঝারি ইউনিয়নের বাসিন্দা আলী আজম বেপারী এবং মোয়াজ্জেম বেপারী সৎ ভাই। তাদের পিতা মির্জা আলী বেপারীর দুটি বিয়ে করার কারণে দুই ভাই একে অপরের সৎ ভাই হিসেবে বিবেচিত হন।
মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে আলী আজম বেপারী আহত হন এবং ১৯৭১ সালের ২৬শে মার্চ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বাধীনতা ঘোষণার পর এক সপ্তাহের মধ্যে তিনি নিখোঁজ হয়ে যান। তখন থেকে আজ পর্যন্ত তার কোনো খোঁজ মেলেনি। আলী আজম বিয়ে করেননি, তার কোনো সন্তান, বাবা-মা বা আপন ভাই-বোনও নেই।
আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে ১৯৯৬ সালে চালু হওয়া মুক্তিযোদ্ধা ভাতা স্কিমের আওতায় মোয়াজ্জেম বেপারীও বীর মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে ভাতা পান। তবে নিখোঁজ চাচা আলী আজমের ভাতা তোলার অভিযোগ উঠেছে মোয়াজ্জেমের ছেলে রাফিন বেপারীর বিরুদ্ধে। রাফিন ভুয়া কাগজপত্রের মাধ্যমে চাচার ভাতা উত্তোলন করছেন বলে অভিযোগ।
মোয়াজ্জেম বেপারী এই বিষয়ে বলেন, "আমার ভাই নিখোঁজ, তার কোনো সন্তান নেই। তাই আমি আমার ছোট ছেলেকে পাওয়ার দিয়ে তার ভাতা তোলার অনুমতি দিয়েছি।"
তবে নড়িয়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার শংকর চন্দ্র বৈদ্য জানান, সৎ ভাই আলী আজমের ভাতা তোলার ঘটনাটি তাদের নজরে এসেছে এবং প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য মুক্তিযোদ্ধা মন্ত্রণালয়ে প্রতিবেদন পাঠানো হয়েছে।
মুক্তিযোদ্ধা মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সহকারী সচিব নুসরাত জাহান বলেছেন, "নিখোঁজ মুক্তিযোদ্ধার ক্ষেত্রে বাবা-মা, স্ত্রী, সন্তান বা আপন ভাই ছাড়া অন্য কেউ ভাতা ভোগ করতে পারবেন না। অভিযোগ পেলে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।"