লক্ষ্মীপুরের রামগতিতে বীর মুক্তিযোদ্ধা জবিউল হক মাস্টারকে হত্যার পর আসামি জুয়েল হাওলাদার (৩৯) প্রায় ১৪ বছর পালিয়ে ছিলেন। সম্প্রতি হত্যার দায়ে তাকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আদালত। রায়ের পর তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় র্যাব বিশেষ অভিযান চালিয়ে ঢাকা থেকে তাকে গ্রেফতার করেছে।
বুধবার (১০ মে) দুপুরে র্যাব-১১ এর নোয়াখালী ক্যাম্পের কোম্পানি অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কমান্ডার মাহমুদুল হাসান বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।এর আগে ভোরে ঢাকার আশুলিয়া এলাকা থেকে র্যাব তাকে গ্রেফতার করে। জুয়েল রামগতি উপজেলার আলেকজান্ডার ইউনিয়নের সেবাগ্রামের ওমর ফারুকের ছেলে। তিনি ঘটনার দিন থেকে ১৩ বছর ১০ মাস ১৬ দিন পলাতক ছিলেন।
র্যাব-১১ এর নোয়াখালী ক্যাম্পের কোম্পানি অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কমান্ডার মাহমুদুল হাসান বলেন, ঘটনার পরপরই জুয়েল গ্রেফতার এড়ানোর জন্য ঢাকার আশুলিয়া গিয়ে গা ঢাকা দেন। সেখানে নিজেকে মজিবুর রহমান পরিচয় দিয়ে প্রথমে একটি মুদি দোকানে চাকরি নেন। দুই বছর পর সেখানকার একটি গার্মেন্টেসে চাকরি শুরু করেন তিনি। আদালতের রায়ের পর র্যাব তাকে গ্রেফতারে গোয়েন্দা কার্যক্রম শুরু করে। অবশেষে হত্যা মামলার রায়ের ২ মাস ২৪ দিন পর তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তাকে লক্ষ্মীপুরের রামগতি থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।আদালত সূত্র জানায়, গত ১৫ ফেব্রুয়ারি মুক্তিযোদ্ধা জবিউল হক মাস্টার হত্যা মামলার রায় দেন অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালত-১ এর বিচারক আজিজুল হক। এতে জুয়েলকে মৃত্যুদণ্ড ও মাহবুব মাফু (৩৮) নামে এক আসামিকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয়। কিন্তু রায়ের সময় এ দুই আসামি পলাতক ছিলেন। অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় এ মামলায় তখন আরও চারজনকে খালাস দিয়েছে আদালত।
এদিকে, মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত জুয়েলকে র্যাব গ্রেফতার করলেও যাবজ্জীবন দণ্ডপ্রাপ্ত মাহবুব এখনো পলাতক। তিনি রামগতির সেবাগ্রামের মৃত মানিক হাওলাদারের ছেলে।মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, মুক্তিযোদ্ধা জবিউল হক আলেকজান্ডার ইউনিয়নের সেবাগ্রামের হাজি আবদুল কাদেরের ছেলে। আসামিদের সঙ্গে তার জমি নিয়ে বিরোধ ছিল। আসামিরা ২০০৯ সালের ২৩ জুন দুপুরে ওই জমি থেকে মাটি কাটছিলেন। এসময় বাধা দেওয়ায় প্রতিবেশী আলাউদ্দিন চৌধুরীর নির্দেশে অভিযুক্তরা জবিউল হকের মাথায় কাঠ দিয়ে আঘাত করেন। পরে তাকে উদ্ধার করে স্থানীয় গ্রাম্য চিকিৎসকের কাছে নিয়ে গেলে মৃত ঘোষণা করা হয়।
এ ঘটনায় জবিউল হকের ভাই হাজি নুরুল ইসলাম বাদী হয়ে আলাউদ্দিনকে প্রধান আসামি করে ১৩ জনের বিরুদ্ধে রামগতি থানায় হত্যা মামলা করেন। ২০১১ সালের ২১ মে লক্ষ্মীপুর সিআইডি পুলিশের পরিদর্শক বশির আহাম্মদ আদালতে চূড়ান্ত প্রতিবেদন দাখিল করেন।