মোজাম্মেলকে টাকা দিলেই মুক্তিযোদ্ধা সনদ, শিক্ষার প্রকল্পে কমিশন ছাড়া বুঝতেন না নাহিদ।
টাকা দিলেই সহজেই মিলত মুক্তিযোদ্ধা সনদ। আর এ কাজ করতেন বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক। টাকার বিনিময়ে তিনি অসংখ্য ব্যক্তিকে ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা সনদ দিয়েছিলেন।
শিক্ষাবিষয়ক বিভিন্ন প্রকল্পে টাকার বিনিময়ে পছন্দের ঠিকাদারদের কাজ দিতেন বিতর্কিত সাবেক শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ। শিক্ষার বিভিন্ন প্রকল্পে ঠিকাদারদের কাছ থেকে তিনি নিতেন নির্দিষ্ট হারে কমিশন।
এই দুই সাবেক মন্ত্রীর এমন দুর্নীতির তথ্য পেয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। দুর্নীতিবিরোধী সংস্থাটির গোয়েন্দা ইউনিট এরইমধ্যে মোজাম্মেল ও নাহিদের বিরুদ্ধে জ্ঞাত আয়বহির্ভূত স্থাবর-অস্থাবর সম্পদের গোপন তথ্য সংগ্রহ করেছে।
গত ২২ অক্টোবর আওয়ামী লীগ সরকারের দুই সাবেক মন্ত্রীর অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ প্রকাশ্যে অনুসন্ধানের সিদ্ধান্ত নেয় দুদক। অনুসন্ধান কর্মকর্তার প্রতিবেদনের পর সেই আলোকে কমিশন তাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেবে বলে দুদকের সংশ্লিষ্ট সূত্র নিশ্চিত করেছে।
দুদক সূত্র জানায়, মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে থাকাকালে মোজাম্মেল হক মন্ত্রী থাকাকালে ক্ষমতার অপব্যবহার, অনিয়ম-দুর্নীতির মাধ্যমে বিপুল সম্পদ অর্জন করেন। তিনি টাকার বিনিময়ে অসংখ্য ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা সনদ দিয়েছেন।
মোজাম্মেলের নামে গাজীপুরের বিভিন্ন মৌজায় ৭৯২ দশমিক ৫৬ শতক জমির খোঁজ মিলেছে। তার নামে গাজীপুরের জয়দেবপুরে তিনতলা ভবন ও একই এলাকায় আরেকটি দোতলা ভবন রয়েছে। বিনিয়োগ রয়েছে বিভিন্ন ব্যবসায়। পাশাপাশি টাকা জমা রেখেছেন ব্যাংকে।
এছাড়া মোজাম্মেলের নামে দুটি গাড়ি (ঢাকা মেট্রো-ঘ-১৩-৪৬৭৭ ও ঢাকা মেট্রো-ঘ-১৫-৯৮৬০) রয়েছে। এর বাইরে বিভিন্ন প্রকল্প থেকে কমিশন নিয়ে কোটি কোটি টাকা অর্জন করেছে সাবেক এ মন্ত্রী। এসব অর্থে নিজ নামে, স্ত্রী ও অন্যান্য স্বজনের নামে সম্পদ করার তথ্যও পেয়েছে দুদক।
এদিকে দুদকের গোপন অনুসন্ধানে সাবেক শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদের ঢাকা ও সিলেটে জমি, বাড়ি, ব্যবসা ও ব্যাংকের সঞ্চয়পত্রে মোটা অংকের বিনিয়োগের তথ্য মিলেছে।
দুদকে সূত্র জানায়, আওয়ামী লীগ সরকারের সাবেক শিক্ষামন্ত্রী নাহিদ বিভিন্ন শিক্ষা প্রকল্পের ঠিকাদারের কাছ থেকে নির্দিষ্ট হারে কমিশন নিতেন। তিনি নিজ নামে ঢাকার উত্তরায় ফ্ল্যাটসহ পাঁচ কাঠা জমি, নিকুঞ্জ এলাকায় তিন কাঠা জমি করেছেন। এছাড়া একক ও যৌথ মালিকানায় সিলেটের বিয়ানীবাজারে অকৃষিজমি রয়েছে।
এছাড়া নাহিদের নিজ নামে বিভিন্ন ব্যাংকে টাকা জমা ও অন্যান্য ব্যবসায় বিনিয়োগ রয়েছে। নিজ নামে ও স্ত্রীর নামে সঞ্চয়পত্রে মোটা অঙ্কের টাকাও রয়েছে। একটি দামি গাড়িও (ঢাকা মেট্রো-ঘ-১৮-৪৪০০) রয়েছে সাবেক এ মন্ত্রীর।
নাহিদের যুক্তরাজ্যপ্রবাসী ভাই ডা. নজরুল ইসলাম এবং যুক্তরাষ্ট্রপ্রবাসী বন্ধু কামাল আহমেদের মাধ্যমে বিপুল অর্থ পাচার করার তথ্যও পেয়েছে দুদক। এছাড়া নাহিদ নিজ নামে, স্ত্রী ও অন্যান্য স্বজনের নামে স্থাবর-অস্থাবর বিপুল সম্পদ অর্জন করেছেন
সূত্র ঢাকা পোস্ট