১ ডিসেম্বর মুক্তিযোদ্ধা দিবস হোক

 আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আছে একযুগেরও বেশি সময়। ১৪ দলীয় জোট ও মহাজোট মিলে প্রতিশ্রুতি মোতাবেক সরকারি/রাষ্ট্রীয়ভাবে একবারও মুক্তিযোদ্ধা দিবস পালন করেনি তারা। 


সাধারণ মুক্তিযোদ্ধাদের অবহেলা চরম আকার ধারণ করেছে। এর সঙ্গে যুক্ত হয়েছে হাজার হাজার ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা। এসব কিসের আলামত? আওয়ামী লীগ কি মুক্তিযুদ্ধের সঠিক ইতিহাস ও মুক্তিযোদ্ধাদের সঠিক এবং চূড়ান্ত তালিকা করতে চায় না? নাকি, দলীয় নেতাকর্মীদের মুক্তিযোদ্ধা বানানোই মূল লক্ষ্য? আওয়ামী লীগ যদি দলীয় নেতাকর্মীদের মুক্তিযোদ্ধা বানাতে চায়, তা হলে অন্যদল ক্ষমতাসীন হলে তারাও তাদের কর্মীদের মুক্তিযোদ্ধা বানাতে চাইবে? যা লজ্জাজনক।



অত্যন্ত দুঃখজনক দৃষ্টান্ত রেখেছেন প্রতিমন্ত্রী তাজুল ইসলাম। মন্ত্রী মোজ্জাম্মেল হক ভূঁইয়া বাতিল করতে গিয়েও করতে পারেননি নানা প্রতিকূলতা ও চাপের মুখে। মুক্তিযোদ্ধা যাচাই-বাছাই করতে গিয়েও তিনি ব্যর্থ হয়েছেন! প্রধানমন্ত্রীর প্রশ্নের জবাব দিতে মন্ত্রী মোজ্জাম্মেল হক সমর্থ হননি। মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ে যে কয়েকজন সচিব এসেছেন, একজনও যথার্থ ভূমিকা রাখতে সক্ষম হননি। মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ে প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধাদের আহাজারি ও কষ্টের সীমা নেই। মন্ত্রণালয়ে মুক্তিযোদ্ধাদের আহাজারি ও কষ্ট লাঘবে মন্ত্রী অথবা সচিবের যেন কোনো দায়দায়িত্ব নেই।

১ ডিসেম্বর মুক্তিযোদ্ধা দিবস হোক
ছবি ঃ সংগৃহীত 


সরকারের পলিসি না অন্য কিছু? বেগম জিয়া ২০০২ সালে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয় প্রতিষ্ঠা করেন। সে সময়ে মুক্তিযোদ্ধাদের কল্যাণ নিশ্চিত করা হয়নি। মুক্তিযোদ্ধারা আশা করেছিলেন, বেগম জিয়ার সরকার পরিবর্তন হলে আওয়ামী লীগ সরকার প্রতিষ্ঠিত হলে মুক্তিযোদ্ধাদের কল্যাণ নিশ্চিত করা হবে। মন্ত্রণালয়ে মুক্তিযোদ্ধাদের হয়রানি হবে না।

২০০১ সালের মার্চ মাসে শেখ হাসিনার সরকার ৪১ হাজার মুক্তিযোদ্ধাকে মুক্তিযোদ্ধা দুস্থ ভাতা বলে ৩শ’ শত টাকা ভাতা চালু করেছিলেন। অর্থাৎ প্রথমেই মুক্তিযোদ্ধারা হলো দুস্থ! সরকার পরিবর্তন হলে বেগম জিয়ার সরকার ৩শ’ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৫০০ শত টাকায় মুক্তিযোদ্ধা ভাতা বৃদ্ধি এবং ভাতাভোগীর সংখ্যা ৫ বছরে ১ লাখেরও বেশি করে। মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রথম প্রতিমন্ত্রী অমুক্তিযোদ্ধা রেদোয়ান আহাম্মদ পরের প্রতিমন্ত্রী মুক্তিযুদ্ধবিরোধী রাজাকার সমর্থিত রেজাউল করিম ‘নিজেই মুক্তিযোদ্ধা হয়ে গেলেন’ শ্রমিক নেতা শাহ মোহাম্মদ আবু জাফরের প্রস্তাবে। মুক্তিযোদ্ধারা হলেন আশাহত।

মুক্তিযোদ্ধারা প্রত্যাশা করতে থাকল, আওয়ামী লীগ তথা আওয়ামী জোট ক্ষমতাসীন হলে মুক্তিযোদ্ধারা যথাযথ মূল্যায়িত হবেন। তৎকালীন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক মরহুম আবদুল জলিল নেতা আবদুর রাজ্জাকের নির্দেশনায় মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের রাজনৈতিক শক্তিকে জোটবদ্ধ করার কাজে নিয়োজিত হন। ২০০৪ সালের ১০ নভেম্বর মুক্তাঙ্গনে সকালে জোট নেতারা মুক্তিযোদ্ধাদের কল্যাণে ২৬ দফা কল্যাণ কর্মসূচির ইশতেহার পাঠ করেন। ২৬ দফার মধ্যে একটি দফা ছিল ১ ডিসেম্বর মুক্তিযোদ্ধা দিবস পালিত হবে।


নবীনতর পূর্বতন

যোগাযোগ ফর্ম