কুষ্টিয়ার দৌলতপুরে বাদপাড়া মুক্তিযোদ্ধারা মানববন্ধন ও সমাবেশ করেছেন। মুক্তিযোদ্ধা হিসাবে নিজেদের নাম অন্তর্ভুক্তির দাবি জানিয়ে তারা এ মানববন্ধন করেন।বুধবার (২৩ নভেম্বর) বেলা ১১টায় বাদপড়া মুক্তিযোদ্ধা বাস্তবায়ন কমিটির ব্যানারে দৌলতপুর উপজেলা পরিষদের সামনের সড়কে ঘণ্টাব্যাপী এ মানববন্ধন ও সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে। এতে প্রায় দেড় শতাধিক বাদপাড়া মুক্তিযোদ্ধা অংশ নেন।
বাদপড়া মুক্তিযোদ্ধা বাস্তবায়ন কমিটির সভাপতি মতিউল আলম বাচ্চুর সভাপতিত্বে মানববন্ধন পরবর্তী সমাবেশে অন্যান্যের মধ্যে কমিটির সাধারণ সম্পাদক রেজাউল হক, শাজাহান আলী, আলী হোসেন প্রমুখ বক্তব্য রাখেন। সভায় বক্তারা বলেন, আমরা ১৯৭১ সালে বঙ্গবন্ধুর ডাকে সাড়া দিয়ে স্বাধীনতা যুদ্ধে অংশ নিতে ভারতের নদীয়া জেলার শিকারপুর রিসিপশন ক্যাম্পে ভর্তি হই। বেশ কয়েকদিন সেখানে কাটানোর পর রিক্রুটিং করে জমশেরপুর ইয়ুথ ক্যাম্পে নিয়ে যাওয়া হয়।
সেখানে আমরা তিনমাসের বেশি সময় ট্রেনিং করি। আমাদের ট্রেনিংয়ের শেষের দিকে দেশ স্বাধীন হয়। ক্যাম্প প্রশাসন আমাদের প্রত্যেককে দেশে ফিরে আসার জন্য একটি করে সনদপত্র দেন। যারা উচ্চতর প্রশিক্ষণের জন্য বিহার বীরভূমি ও অন্যান্য ক্যাম্পে ছিল তারা ও আমরা একই সঙ্গে দেশে ফিরে আসি।
ছবি ঃ সংগৃহীত |
তৎকালীন থানা সার্কেল অফিসার পরপর দুইমাস আমাদের ভাতাও দেন। পরবর্তীতে যারা উচ্চতর প্রশিক্ষণরত অবস্থা থেকে ফিরে আসে তাদের মুক্তিযোদ্ধা হিসাবে গেজেটভুক্ত করা হলেও আমাদের তা করা হয়নি। আমাদের মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে স্বীকৃতির জন্য ২০১৪ সালে অনলাইনে আবেদন করার প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়। কিন্তু জামুকার সিদ্ধান্ত উপেক্ষা করে ২০১৭ সালে যাচাই-বাছাই কমিটি গঠন করে এক প্রহসনের যাচাই-বাছাই হয়। আমরা মুক্তিযুদ্ধে কোনো অবদান রাখেনি এই মর্মে তথ্য পাঠানো হয়।সমাবেশে বাদপড়া মুক্তিযোদ্ধারা তৎকালীন ইয়ুথ ক্যাম্পের তালিকা এবং মিলিশিয়া ক্যাম্পের তালিকা অনুযায়ী মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে তাদের তালিকাভুক্ত করার জন্য বর্তমান প্রধানমন্ত্রীর সুদৃষ্টি কামনা করেন।
মানববন্ধন ও সমাবেশের আগে বাদপাড়া মুক্তিযোদ্ধা বাস্তবায়ন কমিটির পক্ষ থেকে এক সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।
সংবাদ সম্মেলনে মতিউল আলম বাচ্চু বলেন, মিলিশিয়া ক্যাম্পে উপস্থিত হওয়ার পর অস্ত্র জমা হয়। সেখানে একটা সনদ দেওয়া হয়। আতাউল গনী ওসমানীর সই করা সনদ, সেটা আমাদের কাছে আছে। আমাদের দাবি আমাদের তালিকা আছে মিলিশিয়া ক্যাম্পে, সেটা অনুযায়ী স্বীকৃতি দেওয়া হোক।
রেজাউল হক বলেন, মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেওয়া অন্তত ৪০০ মানুষ স্বীকৃতির আশায় আজও প্রহর গুনছে।