মৃত্যুর ৫১ বছর পর মুক্তিযোদ্ধা স্বীকৃতি পেলেন বরিশালের বানারীপাড়ার কাজী মতিউর রহমান। গত ৫ জানুয়ারি বাংলাদেশ গেজেটের অতিরিক্ত সংখ্যার ৭ ক্রমিকে গেজেটে ৩৬৩৮ নম্বরে শহীদ কাজী মতিউর রহমানের নাম প্রকাশিত হয়েছে। সম্প্রতি সেই গেজেটের কপি শহীদ পরিবার হাতে পেয়েছে। এতে খুশি শহীদ পরিবারের সদস্য ও তার সহযোগী মুক্তিযোদ্ধারা।দেশ বিজয়ের মাত্র ২০ দিন আগে শত্রুদের বুলেটে নিভে যায় দেশমাতৃকার বীর সেনানী শহীদ মুক্তিযোদ্ধা বানারীপাড়ার কাজী মতিয়ার রহমানের জীবনপ্রদীপ। ১৯৭১ সালের ২৬ নভেম্বর রাতে পিরোজপুর জেলার স্বরূপকাঠি উপজেলার ছারছিনায় আলবদরদের ঘাঁটিতে আক্রমণ চালাতে গেলে শত্রুদের বুলেটে মৃত্যু ঘটে তার।
বরিশালের বীর মুক্তিযোদ্ধা ও সাংস্কৃতিক আন্দোলনের নেতা এনায়েত হোসেন চৌধুরী বলেন, ‘একজন দুঃসাহসিক যোদ্ধা ছিলেন কাজী মতিউর রহমান। আমরা তাকে মতি কাজী বলে ডাকতাম।তিনি তুখোড় ছাত্রনেতা ছিলেন এবং চাখারে এ কে ফজলুল হক কলেজের ভিপি ছিলেন।’
তিনি আরো বলেন, ‘মুক্তিযুদ্ধের সময় ভারতে প্রশিক্ষণ নিয়ে ফেরার পথেই তিনি তৎকালীন মাগুরা বর্তমান ছারছিনায় রাজাকারের গুলিতে শহীদ হন। স্বাধীনতার ৫১ বছর পর একজন মুক্তিযোদ্ধার নাম শহীদ তালিকায় যুক্ত হয়। এই যে বিলম্ব, এটা বড়ই লজ্জার।
এভাবেই সত্যিকারের মুক্তিযোদ্ধারা অবহেলিত থেকে গেছে দেশের বিভিন্ন এলাকায়। খুঁজলে হয়তো আরো কয়েক শ নাম এভাবে উঠে আসবে।’
###
বরিশালের আরেক মুক্তিযোদ্ধা বীরপ্রতীক কে এস এম মহিউদ্দিন মানিক বলেন, ‘কাজী মতিউর রহমান মুক্তিবাহিনী গঠনের আগেই মুক্তিযুদ্ধের একজন সংগঠক হিসেবে কাজ করেছেন। তিনি ছাত্রনেতা ছিলেন ও বঙ্গবন্ধুর খুবই ঘনিষ্ঠ ছিলেন। আজ পর্যন্ত তার লাশটি খুঁজে পাওয়া যায়নি এবং মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের সরকার তা উদ্ধারের জন্য কোনো চেষ্টাও করেনি, যা সত্যি দুঃখজনক।
তার চেয়েও দুঃখজনক তার নামটি গেজেটভুক্ত হতে ৫১ বছর সময় লেগে যাওয়া ‘
আরও পড়ুন মুক্তিযোদ্ধার দুই পা ভেঙে দেয়াসহ দুই জনকে গুরুতর জখম করেছে দুর্বৃত্তরা
এই বীরপ্রতীক আরো বলেন, সরকার চাইলে এবং অনুসন্ধান চালালে আজও হয়তো তার কঙ্কাল ছারছিনা থেকে উদ্ধার করা সম্ভব হবে।