নির্বাচন ও ক্ষমতার ভারসাম্যে মতামত সেনাপ্রধানের, বিএনপি-জামায়াত কী বলছে?।
ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের মুখে গত ৫ আগস্ট প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করে হেলিকপ্টারে করে ভারতে পালাতে বাধ্য হন শেখ হাসিনা। এরপর থেকে ভারতেই অবস্থান করছেন তিনি। হাসিনার দেশ ছেড়ে পালানোর পর নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে গঠিত হয় অন্তর্বর্তী সরকার।এই সরকার ইতোমধ্যে দেশের প্রধান প্রধান খাতে সংস্কারের উদ্যোগ নিয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে অন্তর্বর্তী সরকারকে সমর্থনের অঙ্গীকার করেছেন বাংলাদেশের সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান। এ ছাড়া আগামী ১৮ মাসের মধ্যে যাতে নির্বাচন হতে পারে, সে জন্য গুরুত্বপূর্ণ সংস্কারগুলো সম্পন্ন করতে ‘পরিস্থিতি যাই হোক না কেন’ এই সরকারকে সমর্থনের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন তিনি।ড. ইউনূস প্রসঙ্গে জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান বলেন, ‘আমি তার পাশে থাকব। যা-ই হোক না কেনো। যাতে তিনি তার মিশন সম্পন্ন করতে পারেন।’
সোমবার (২৩ সেপ্টেম্বর) বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে সেনাপ্রধান এসব কথা বলেন। তার সাক্ষাৎকারের ভিত্তিতে মঙ্গলবার (২৪ সেপ্টেম্বর) একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে রয়টার্স।সাক্ষাৎকারে নানা বিষয় নিয়ে সেনাপ্রধান তার মতামত প্রকাশ করেন। তিনি মনে করেন, সংস্কারের ধারাবাহিকতায় এক থেকে দেড় বছরের মধ্যে গণতন্ত্রে উত্তরণ ঘটা উচিত এবং সেনাবাহিনী রাজনৈতিক প্রক্রিয়ায় কোনো হস্তক্ষেপ করবে না। একই সঙ্গে তার এ সাক্ষাৎকারে প্রেসিডেন্ট ও প্রধানমন্ত্রীর ক্ষমতার ভারসাম্য এবং সশস্ত্র বাহিনীকে প্রেসিডেন্টের অধীনে নেওয়ার ধারণাও উঠে এসেছে।
শেখ হাসিনার সরকারের বিদায়ের পর থেকে অন্যতম প্রধান রাজনৈতিক দল বিএনপি দ্রুত সময়ের মধ্যে নির্বাচন দাবি করে আসছে। তবে সরকারের দিক থেকে নির্বাচন কমিশন, বিচার বিভাগ, পুলিশসহ ছয়টি বিষয়ে সংস্কারের জন্য কমিশন গঠন করা হয়েছে। এসব কমিশন ১ অক্টোবর থেকে কাজ শুরু করে পরবর্তী তিন মাসের মধ্যে রিপোর্ট দেওয়ার কথা রয়েছে।
এদিকে সেনাপ্রধানের ১৮ মাসের মধ্যে নির্বাচনের বিষয়ে করা মন্তব্যে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর গণমাধ্যমকে বলেছেন যে তারা মনে করেন নির্বাচন যৌক্তিক সময়ের মধ্যেই হওয়া উচিত।
মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছিলেন, ‘নির্বাচন যত দ্রুত হবে ততই জাতির জন্য মঙ্গল হবে। সংস্কার প্রক্রিয়ায় জনগণের অংশগ্রহণ জরুরি। সেজন্যই নির্বাচনের দরকার।’
অন্যদিকে জামায়াতে ইসলামীর মুখপাত্র মতিউর রহমান আকন্দ বলেছেন, ‘সেনাপ্রধান সামগ্রিক প্রেক্ষাপটে তার বক্তব্য দিয়েছেন। নির্বাচন বিষয়ে আমাদের আমির দলের অবস্থান আগেই তুলে ধরেছেন। তিনি জরুরি সংস্কারগুলো শেষ করে নির্বাচনের কথা বলেছেন। আপাতত এটুকুই এ বিষয়ে দলের বক্তব্য।