Bangladesh news update মাঠে সরব হচ্ছেন নেতাকর্মীরা জেলা-মহানগরে সমাবেশ করবে বিএনপি

 অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠনের পর আড়াই মাস পেরিয়ে গেছে। সরকারের কর্মকাণ্ডে ধীরগতি দেখলেও তাদের সর্বোচ্চ সহায়তা করতে চায় বিএনপি। একই সঙ্গে নানা ষড়যন্ত্র মোকাবিলায় রাজপথে থাকারও সিদ্ধান্ত নিয়েছে দলটি। আওয়ামী লীগের সর্বোচ্চ পর্যায় থেকে অডিও কথোপকথনকেও গুরুত্ব সহকারে নিয়েছেন দলের নীতিনির্ধারকরা। 


এ নিয়ে সতর্ক থাকার পাশাপাশি আগামী নভেম্বরে মহানগরসহ সব সাংগঠনিক জেলায় সমাবেশের কথা ভাবছে। এ কর্মসূচির মাধ্যমে বর্তমান পরিস্থিতিতে দলটির অবস্থানও জনগণকে জানাতে চায়। এ কর্মসূচি নিয়ে ইতোমধ্যে বিভিন্ন ফোরামে আলোচনা হয়েছে। সমাবেশে বিএনপির ঘোষিত রাষ্ট্র সংস্কারে ৩১ দফা তুলে ধরার পাশাপাশি দ্রুত সময়ের মধ্যে নির্বাচনি রোডম্যাপের দাবি তোলা হতে পারে। একই সঙ্গে দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণ, খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানসহ আন্দোলনরত রাজনৈতিক দলগুলোর নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার, প্রশাসনসহ বিভিন্ন সেক্টর থেকে আওয়ামী লীগের দোসরদের সরানো, হাজারো ছাত্র-জনতাকে হত্যাসহ ১৫ বছরে গুম-খুনে জড়িতদের বি


চারের দাবিও থাকবে। একই কর্মসূচি দেশের গুরুত্বপূর্ণ জেলা সদরে পালন করতে পারে সমমনা দলগুলোও। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে এসব তথ্য।


দলটির একাধিক সিনিয়র নেতা জানান, আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার সর্বশেষ অডিও কথোপকথনে হুমকি-ধমকির বিষয়টি আছে। এ নিয়ে সরকারকে আরও সতর্ক থাকতে হবে। বিষয়টিকে গুরুত্ব দিয়ে বিএনপিও মাঠ না ছাড়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। পাশাপাশি নির্বাচনি রোডম্যাপ নিয়ে সরকারের পক্ষ থেকে এখনো কোনো স্পষ্ট বক্তব্য না আসায় বিএনপিসহ সমমনা রাজনৈতিক দলগুলো ভালো দৃষ্টিতে দেখছে না। এর মধ্যে আবার রাষ্ট্রপতি অপসারণ ইস্যুতে সাংবিধানিক সংকট সৃষ্টির ষড়যন্ত্র করছে একটি মহল। নির্বাচনকে প্রলম্বিত করার একটা চেষ্টা রয়েছে। 


নেতাদের ধারণা, এ সুযোগ নিয়ে আওয়ামী লীগকে মাঠে নামানোর পাঁয়তারা করছে ওই মহল। দেশে বিশৃঙ্খল পরিবেশ সৃষ্টি হোক, তা চায় না বিএনপি। এজন্যই মাঠে থাকবেন নেতাকর্মীরা। এরই অংশ হিসাবে মহানগর ও জেলায় সমাবেশ করার বিষয়ে ইতোমধ্যে নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিএনপি। এখন কবে থেকে এ কর্মসূচি শুরু করবে এবং কোন জেলা বা মহানগরে কবে সমাবেশ হবে, এর তারিখ ঠিক করার কথা রয়েছে দায়িত্বশীল নেতাদের। রাষ্ট্রপতি অপসারণ ইস্যুতে বিভিন্ন ধরনের কথা বলা হচ্ছে, যা ইঙ্গিতপূর্ণ। সেজন্য সমাবেশে জনগণকে এ বিষয়ে দলের অবস্থানও জানানো হতে পারে। জানতে চাইলে বিএনপির কেন্দ্রীয় যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স যুগান্তরকে বলেন, ‘সভা-সমাবেশ একটি চলমান প্রক্রিয়ারই অংশ। দীর্ঘদিন বন্যার কারণে এসব কর্মসূচি আমাদের স্থগিত রাখতে হয়েছিল। এখন তো বন্যার পানি নেমে গেছে। ধীরে ধীরে রাজনৈতিক ও সাংগঠনিক কার্যক্রম শুরু করা উচিত। বিভিন্ন ইস্যু সামনে আসছে। এই ইস্যুর ভিত্তিতে আমাদের কাজ করা উচিত।’ 


বিএনপি নেতাদের মতে, ড. মুহাম্মদ ইউনূস নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকারকে সব ধরনের সহযোগিতা করছে দল, যা ভবিষ্যতেও করবে। কিন্তু জনমনে নানা প্রশ্নও আছে। আওয়ামী লীগ ১৫ বছর ক্ষমতায় থাকাকালে বিরোধী বহু নেতাকর্মীকে গুম-খুন, নির্যাতন করেছে। সর্বশেষ হাজারো ছাত্র-জনতাকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়েছে। অথচ এসব ঘটনায় জড়িত গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের এখনো গ্রেফতার করতে পারেনি। অনেকে পালিয়ে গেছেন। বিষয়টি জনগণ ভালোভাবে দেখছে না। 


এছাড়া গণতন্ত্রের জন্য গুরুত্বপূর্ণ নির্বাচন কমিশনব্যবস্থা সংস্কার, সেদিকে এখন পর্যন্ত কোনো দৃশ্যমান কিছু দেখা যায়নি। দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণ, বাজার সিন্ডিকেট ভাঙা যায়নি। সবচেয়ে বড় কথা-রাজনৈতিক সরকার ছাড়া দেশকে স্থিতিশীল করা যায় না, এটি সরকারকে অনুধাবন করতে হবে। সেজন্য জনগণের যে প্রত্যাশা-গণতন্ত্র ও ভোটাধিকার, তা ফিরিয়ে আনাই প্রথম অগ্রাধিকার হওয়া উচিত। কারণ, গত তিনটি জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জনগণ ভোট দিতে পারেনি। বিশেষ করে তরুণ ভোটাররা ভোট দিতে উদ্গ্রীব হয়ে আছে। সরকারের উচিত হবে জনগণের প্রত্যাশাকে গুরুত্ব দেওয়া। দ্রুত তা না করলে সরকার জনগণের আস্থা হারাতে পারে বলে মনে করেন নেতারা।

যুগান্তর 

নবীনতর পূর্বতন

যোগাযোগ ফর্ম