বগুড়ার প্রাথমিক বিদ্যালয়ে মুক্তিযোদ্ধা কোটায় চাকরি করছেন ৭৫০

বগুড়ার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে মুক্তিযোদ্ধা কোটায় ৭৪৯ জন শিক্ষক ও একজন অফিস সহকারী চাকরি করছেন। প্রাথমিক ও গণশিক্ষা অধিদফতরের নির্দেশে এ তালিকা তৈরি করা হয়েছে। তবে কোনও অভিযোগ না থাকায় এ তালিকায় কোনও ভুয়া নিয়োগ আছে কি না তা যাচাইয়ের আগে কেউ বলতে পারছেন না। বগুড়া জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা (ডিপিইও) রেজোয়ান হোসেন এ তথ্য দিয়েছেন।


বগুড়া জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্র জানিয়েছে, গত আগস্টের শেষ দিকে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা অধিদফতরের পরিচালক (পলিসি ও অপারেশন) লুৎফর রহমান স্বাক্ষরিত চিঠিতে মুক্তিযোদ্ধা কোটায় শিক্ষক নিয়োগের তালিকা চাওয়া হয়। অপরদিকে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উপ-সচিব ড. বিলকিস বেগম স্বাক্ষরিত পত্রে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণির কর্মকর্তা-কর্মচারীর তালিকা চাওয়া হয়েছিল। চিঠি পাওয়ার পর মুক্তিযোদ্ধা কোটায় চাকরি পাওয়া শিক্ষক ও কর্মকর্তা-কর্মচারীর তালিকা দিতে জেলা ১২ উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তাদের জানানো হয়।এরপর বগুড়া জেলার ১২ উপজেলায় ৬০১টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে মুক্তিযোদ্ধা কোটায় ৭৪৯ জন শিক্ষক নিয়োগের তথ্য পাওয়া যায়। এর মধ্যে বগুড়া সদরে ১০৫, গাবতলীতে ৮০, শাজাহানপুরে ৭৭, আদমদীঘিতে ৭৬, শেরপুরে ৭৩, ধুনটে ৭১, সোনাতলায় ৬৬, সারিয়াকান্দিতে ৪৭, শিবগঞ্জে ৪৩, দুপচাঁচিয়ায় ৪২, কাহালুতে ৪০ ও নন্দীগ্রামে ২৯ জন রয়েছেন। এ ছাড়া গাবতলী উপজেলা শিক্ষা অফিসে একজন অফিস সহকারী নিয়োগের তথ্য পাওয়া যায়।


স্থানীয়রা জানান, বিগত সরকারের সময় অনেক ভুয়া মুক্তিযোদ্ধাকে সনদ দেওয়ার অভিযোগ রয়েছে। ওই সনদ দিয়ে অনেকে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে চাকরি নিয়েছেন। সোনাতলা উপজেলার রানীরপাড়ার বীর মুক্তিযোদ্ধা ও সাবেক কমান্ডার রফিকুল ইসলামের বিরুদ্ধে সাত জনকে নিজের সন্তান সাজিয়ে মুক্তিযোদ্ধা কোটায় সরকারি চাকরি পাইয়ে দেওয়ার অভিযোগ ওঠে।


দুদক বগুড়া কার্যালয় কথিত তিন সন্তানের বিরুদ্ধে পৃথক মামলা করে। প্রাথমিক সত্যতা পাওয়ায় তিন জনকে পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিস থেকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় পালিয়ে যাওয়া বগুড়া পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ আবু সাইম জাহানের বিরুদ্ধে তার বাবা মৃত আকবর আলীর নামে ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা সনদ ব্যবহারের অভিযোগ ওঠে। এ ছাড়া আকবর আলীর আরও তিন সন্তান ওই কোটায় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে চাকরি পেয়েছেন বলে অভিযোগ রয়েছে। এ অভিযোগ আদালত পর্যন্ত গড়িয়েছে।


জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা (ডিপিইও) রেজোয়ান হোসেন জানান, শুরু থেকে ২০১৬ সাল পর্যন্ত মুক্তিযোদ্ধা কোটায় শিক্ষক পদে ৭৪৯ জন ও অফিস সহকারী পদে একজন নিয়োগ পেয়েছেন। এসব নিয়োগের তালিকা অধিদফতরে পাঠানো হয়েছে। তাদের বিষয়ে কোনও অভিযোগ নেই। নির্দেশমতো তালিকা পাঠানো হয়েছে। ওইসব নিয়োগে কোনও ভুয়া মুক্তিযোদ্ধার সন্তান আছে কি না তা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ খতিয়ে দেখবে



নবীনতর পূর্বতন

যোগাযোগ ফর্ম