![]() |
ছবিঃসংগৃহীত |
ডলারের কোনো সংকট নেই দেশে, বলে মন্তব্য করেছেন শিল্প প্রতিমন্ত্রী কামাল আহমেদ মজুমদার। তিনি বলেছেন, 'ডলারের কোনো সংকট নেই। আমাদের অর্থমন্ত্রী বারবারই এ কথা বলেছেন। আমাদের দেশের একশ্রেণির অসাধু ব্যবসায়ী যেভাবে বাজারে কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করেন, তেমনিভাবে একশ্রেণির অসাধু লোক ডলারের ব্যাপারে কারসাজি করছেন।'
শিল্পপ্রতিমন্ত্রী এ সময় সাংবাদিকদের উদ্দেশে বলেন, 'আপনারা (সাংবাদিকেরা) অনেক সময় অগ্রিম কিছু কথাবার্তা বলেন। যার কারণে অসাধু ব্যবসায়ীরা উৎসাহ বোধ করেন এবং কৃত্রিম সংকট তৈরি করেন। আপনারা (সাংবাদিক) বলেছেন, ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধের কারণে সারের সংকট হবে। আদতে বাংলাদেশে কোনো সারের সংকট নেই। ইউক্রেন ও রাশিয়ার সঙ্গে সারের কোনো সম্পর্ক নেই। কারণ, আমরা নিজেরাই সার উৎপাদন করি এবং সৌদি আরব, কাতার, বাহরাইন থেকে সার নিয়ে আসি।'
এ সময় তিনি সাংবাদিকদের দেশের মঙ্গলের জন্য সংবাদ ছাপানোর অনুরোধ করেন।রাজধানীর সোনারগাঁও হোটেলে আজ রোববার বিকেলে জাতীয় উৎপাদনশীলতা ও মান উৎকর্ষ পুরস্কার-২০২০ প্রদান অনুষ্ঠানে শিল্প প্রতিমন্ত্রী কামাল আহমেদ মজুমদার এসব কথা বলেন। এ সময় মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন।উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধি ও গুণগত মানসম্পন্ন পণ্য তৈরিতে শ্রেষ্ঠত্বের স্বীকৃতিস্বরূপ এবার ৫টি শ্রেণিতে মোট ২৬টি প্রতিষ্ঠানকে জাতীয় উৎপাদনশীলতা পুরস্কার দেওয়া হয়েছে। শিল্প মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন ন্যাশনাল প্রোডাকটিভিটি অর্গানাইজেশন (এনপিও) এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। অনুষ্ঠানে বিজয়ী প্রতিষ্ঠানগুলোর প্রতিনিধিদের হাতে পুরস্কার তুলে দেন শিল্পমন্ত্রী।অনুষ্ঠানে শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন বলেন, 'ইউক্রেন যুদ্ধসহ বর্তমান বৈশ্বিক প্রেক্ষাপটে আমরা কৃচ্ছ্রসাধন করার চেষ্টা করছি। কিন্তু আমাদের কোনো অভাব দেখছি না। দৈনন্দিন প্রয়োজনীয় সব পণ্যই প্রয়োজন অনুসারে এখন দেশে উৎপাদনের চেষ্টা করছি। এর মধ্য দিয়ে আমাদের পরনির্ভরশীলতা কমাতে হবে, একই সঙ্গে কৃচ্ছ্রসাধন করতে হবে।'
তিনি আরও বলেন, 'আমাদের দেশে অনেক বিদেশি বিনিয়োগ আছে। এ ছাড়া দেশের যাঁরা প্রতিষ্ঠিত ব্যবসায়ী আছেন, তাঁরাও বেসরকারি খাতে বেশি বেশি বিনিয়োগ করতে পারেন। শুধু আমাদের দেশে না, বাইরের দেশেও আপনাদের বিনিয়োগের বিনিয়োগের সুযোগ করে দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। আপনারা সেটাও করতে পারেন।'শিল্পসচিব জাকিয়া সুলতানার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআইয়ের জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি মোস্তফা আজাদ চৌধুরী বাবু ও এনপিওর মহাপরিচালক মুহম্মদ মেসবাহুল আলম।২০২০ সালের জন্য ২৬টি প্রতিষ্ঠানকে বৃহৎ, মাঝারি, ক্ষুদ্র, অতিক্ষুদ্র ও রাষ্ট্রায়ত্ত শিল্প শ্রেণিতে দেওয়া হয়েছে এ পুরস্কার। পাশাপাশি উৎপাদনশীলতা কার্যক্রমে বলিষ্ঠ ভূমিকা পালনের স্বীকৃতিস্বরূপ একটি প্রতিষ্ঠানকে দেওয়া হয়েছে ইনস্টিটিউশনাল অ্যাপ্রিসিয়েশন অ্যাওয়ার্ড। বৃহৎ শিল্প খাত শ্রেণির খাদ্যশিল্প উপখাতে প্রথম পুরস্কার পেয়েছে ইন্টারন্যাশনাল বেভারেজস। আর দ্বিতীয় পুরস্কার পেয়েছে হবিগঞ্জ অ্যাগ্রো। ইস্পাত ও প্রকৌশল উপখাতে প্রথম পুরস্কার পেয়েছে ফেয়ার ইলেকট্রনিকস লিমিটেড। এ ছাড়া শেলটেক (প্রাঃ) লিমিটেড দ্বিতীয় ও রানার অটোমোবাইলস লিমিটেড তৃতীয় পুরস্কার পেয়েছে।এই শ্রেনীতে বস্ত্র ও তৈরি পোশাক উপখাতে শীর্ষ তিনটি পুরস্কার পেয়েছে যথাক্রমে এনভয় টেক্সটাইলস; এম এম ইস্পাহানি ও পাহাড়তলী টেক্সটাইল অ্যান্ড হোসিয়ারি মিলস এবং করণী নিট কম্পোজিট লিমিটেড। সেবা উপখাতে প্রথম নিটল ইনস্যুরেন্স, দ্বিতীয় মীর টেলিকম ও তৃতীয় পুরস্কার পেয়েছে ডিজিকন টেকনোলজিস। তথ্যপ্রযুক্তি (আইটি) উপখাতে পুরস্কার পেয়েছে সার্ভিস ইঞ্জিন। রাসায়নিক উপখাতে প্রিমিয়ার সিমেন্ট মিলস, কোহিনূর কেমিক্যাল এবং স্কয়ার টয়লেট্রিজ যথাক্রমে প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় পুরস্কার পেয়েছে।মাঝারি শিল্প শ্রেণির ইস্পাত ও প্রকৌশল উপখাতে একমাত্র পুরস্কার পেয়েছে সিলভান টেকনোলজিস; বস্ত্র ও পোশাক উপখাতে মাসকোটেক্স এবং ইনডেক্স অ্যাক্সেসরিজ; তথ্যপ্রযুক্তি (আইটি) উপখাতে মিলেনিয়াম ইনফরমেশন সলিউশন এবং রাসায়নিক উপখাতে বিআরবি পলিমার লিমিটেড ও জিএমই অ্যাগ্রো লিমিটেড পুরস্কার পেয়েছে।
ক্ষুদ্র শিল্পের ক্যাটাগরিতে আহমেদ ফুড প্রোডাক্টস (প্রাঃ) লিমিটেড, তোহফা এন্টারপ্রাইজ ও জারমার্টজ পুরস্কার পেয়েছে।
সূত্রঃপ্রথম আলো ২৯ মে ২০২২