একাত্তরে মহান মুক্তিযুদ্ধের সময়ে সংঘটিত হত্যা, গণহত্যা, নির্যাতন, অগ্নিসংযোগ, লুণ্ঠনসহ মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে কুড়িগ্রামের উলিপুর ও রাজারহাটের ১৩ জনের বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ (ফরমাল চার্জ) গঠনের শুনানির জন্য আগামী ১৫ ডিসেম্বর দিন ঠিক করেছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল।
আসামিদের মধ্যে গ্রেফতার হয়ে কারাগারে আছেন মো. নুরুল ইসলাম ওরফে নুর ইসলাম (৭১), এছাহাক আলী ওরফে এছাহাক কাজী (৭৩), মো. ইসমাইল হোসেন (৭০), মো. ওছমান আলী (৭০), মো. আব্দুর রহমান (৬৫), মো. আব্দুর রহিম ওরফে রহিম মৌলানা (৬৫), মো. শেখ মফিজুল হক (৮১), মকবুল হোসেন ওরফে দেওয়ানী মকবুল (৭২), মো. ছাইয়েদুর রহমান মিয়া ওরফে মো. সাইদুর রহমান (৬৪), মো. শাহজাহান আলী (৬৪), আব্দুল কাদের (৬৭)।অন্য দুজন পলাতক। গ্রেফতারের প্রয়োজনে তাদের নাম প্রকাশ করেননি আইনজীবীরা।
শুনানির নির্ধারিত দিনে বুধবার (১৯ অক্টোবর) ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. শাহিনুর ইসলামের নেতৃত্বে তিন সদস্যের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল সময় মঞ্জুর করে এ দিন ঠিক করেন।ট্রাইব্যুনালের অন্য দুই সদস্য হলেন- বিচারপতি আবু আহমেদ জমাদার ও বিচারপতি কে এম হাফিজুল আলম।
আদালতে এদিন রাষ্ট্রপক্ষের শুনানিতে ছিলেন প্রসিকিউটর রেজিয়া সুলতানা চমন। অন্যদিকে আসামিপক্ষে ছিলেন অ্যাডভোকেট গাজী এম এইচ তামিম ও অ্যাডভোকেট আব্দুস সাত্তার পালোয়ান। মামলায় আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করার জন্য আদালতে রাষ্ট্রপক্ষ থেকে ফরমাল চার্জ জমা দেওয়ার পর তা নিয়ে আমরা শুনানি শুরু করেছি। এখন আসামিপক্ষের আইনজীবীদের শুনানির জন্য ১৫ ডিসেম্বর দিন ঠিক করেছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল।
২০২১ সালের ২৫ অক্টোবর মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে উলিপুর ও রাজারহাট উপজেলার ১৩ জনের বিরুদ্ধে তদন্ত প্রতিবেদন চূড়ান্ত করে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থা।
তদন্ত সংস্থার ৮০তম প্রতিবেদন জমার পর এক সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, এ মামলার ১৩ আসামির মধ্যে ১১ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। দুজন পলাতক রয়েছেন। তদন্ত প্রতিবেদনের তিন ভলিউমে ৩৭৫ পৃষ্ঠার প্রতিবেদন চূড়ান্ত করা হয়।
সংবাদ সম্মেলনে ওই প্রতিবেদন তুলে ধরেন তদন্ত সংস্থার প্রধান এম সানাউল হক। এসময় মামলার তদন্ত কর্মকর্তা (আইও) মো. রুহুল আমীনসহ অন্যান্য কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, ১৩ আসামির বিরুদ্ধে ২০১৮ সালের ৩০ জানুয়ারি থেকে তদন্ত শুরু হয়ে ২৪ অক্টোবর শেষ হয়। আটক, নির্যাতন, অপহরণ, গণহত্যা ও অগ্নিসংযোগের ১৬টি অভিযোগ আনা হয়েছে তাদের বিরুদ্ধে। একইসঙ্গে তাদের বিরুদ্ধে ৭৪৫ জনকে হত্যার অভিযোগ রয়েছে