কিন্তু স্বাধীনতার ৫২ বছর পর কেন মোড়টির নাম পরিবর্তন করার প্রয়োজন হলো? এর উত্তর দিয়েছেন তাড়াশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা গাজী আরশেদুল ইসলাম। তিনি কালের কণ্ঠকে বলেন, ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চের পর যুদ্ধের প্রস্তুতি নেয় তাড়াশ থানার মুক্তিকামী ছাত্র জনতা। এ সময় তাড়াশ থানার সোনাপাতিল গ্রামের আজগর আলী আকন্দের ছেলে আলেপ আকন্দ রাজাকার কমান্ডারের নাম লেখান। পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীকে সহায়তা করে ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেন তিনি। হত্যা, লুট ও বাড়িঘর জ্বালিয়ে দেওয়ার অভিযোগে তাকে যুদ্ধাপরাধী হিসেবে তালিকাভূক্ত করা হয়। ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর স্বাধীন বাংলাদেশের অভ্যুদয় হলে আলেপ রাজাকার পালিয়ে যান। ১৯৭৫ সালে জাতির জনকের নির্মম হত্যাকাণ্ডের পর মুক্তিযুদ্ধের চেতনাবিরোধী শক্তি রাষ্ট্র ক্ষমতায় আসলে আলেপ আকন্দ তাড়াশে ফিরে এসে ওই জায়গা কিনে বসবাস করতে থাকেন। সেই থেকে আলেপ রাজাকারের নামে মোড়টির নাম হয়ে যায় আলেপ মোড়। এ নিয়ে মুক্তিযোদ্ধাদের মাঝে তীব্র ক্ষোভ থাকলেও অদৃশ্য কারণে মোড়টির নাম পাল্টাতে প্রশাসন কোনো উদ্যোগ নেয়নি। ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসলে মোড়ের নাম পাল্টানোর উদ্যোগ নেওয়া হয়। কিন্তু কোন মুক্তিযোদ্ধার নামে নামকরণ হবে এ নিয়ে মুক্তিযোদ্ধাদের মাঝেই দ্বিমত দেখা দেয়।
তাড়াশ উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. মেজবাউল করিম বলেন , বিষয়টি নিয়ে আইন শৃঙ্খলা কমিটিতে একাধিক বার তোলেন মুক্তিযোদ্ধাসহ শহীদ পরিবারের সদস্যরা। যার ফলে সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনা করে সকল মুক্তিযোদ্ধাদের স্মরণে মোড়টির নাম করণের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় ‘বীর মুক্তিযোদ্ধা মোড়’ নামে। স্বাধীনতার সূবর্ণজয়ন্তী ও মুজিব জন্ম শতবার্ষিকীতে একজন চিহ্নিত রাজাকারের নামে একটি মোড়ের নাম থাকতে পারে না। সে কারণে কলঙ্ক মোচন করতে তাড়াশ পৌরসভার অর্থায়নে এ উদ্যোগ নেওয়া হয়।
সিরাজগঞ্জের তাড়াশ উপজেলা সদরের পশ্চিমপাশে ত্রিমোহনী মোড়টি পরিচিতি ছিল আলেপ মোড় নামে। স্বাধীনতার ৫২ বছর পর এ মোড়ের নাম পরিবর্তন করে রাখা হলো বীর মুক্তিযোদ্ধা মোড়। আজ শনিবার ফলক উন্মোচনের মধ্য দিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন করা হয়।
ফলে পিছিয়ে যায় সে উদ্যোগ।