১৪ ডিসেম্বর শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস ২০২৫ দেশব্যাপী যথাযোগ্য মর্যাদায় পালনের লক্ষ্যে বিভিন্ন কর্মসূচীর ব্যয় নির্বাহের জন্য সরকার অগ্রিম বরাদ্দ অনুমোদন দিয়েছে। এই বরাদ্দের মাধ্যমে জাতীয় স্মৃতিসৌধ, মিরপুর বুদ্ধিজীবী কবরস্থানসহ সারাদেশে শ্রদ্ধা নিবেদন, আলোচনা সভা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও নিরাপত্তা ব্যবস্থা পরিচালনা করা হবে। স্বাধীনতার শত্রুদের হাতে নিহত শহীদ বুদ্ধিজীবীদের স্মরণে এ দিবস দেশে গভীর তাৎপর্য বহন করে। সরকারের এই উদ্যোগ সকল শ্রেণিপেশার মানুষকে দিবসটির গুরুত্ব স্মরণ করিয়ে দেবে এবং তরুণ প্রজন্মকে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ধারণে উদ্বুদ্ধ করবে।
শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস ২০২৫: জাতির শ্রদ্ধা, স্মৃতি ও দায়িত্ব
বাংলাদেশের স্বাধীনতার ইতিহাসে ১৪ ডিসেম্বর একটি বেদনাময় কালো অধ্যায়। ১৯৭১ সালের এই দিনে বিজয় নিশ্চিত জেনে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী ও তাদের দোসর আলবদর-রাজাকার বাহিনী দেশের বরেণ্য বুদ্ধিজীবীদের পরিকল্পিতভাবে হত্যা করে। উদ্দেশ্য ছিল—বাংলাদেশ যেন মেধাশূন্য হয়ে যায় এবং স্বাধীনতার পর দেশ পরিচালনায় পিছিয়ে পড়ে।
এই মর্মান্তিক হত্যাকাণ্ডের স্মৃতি নিয়েই প্রতিবছর জাতীয়ভাবে পালিত হয় শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস।
২০২৫ সালের কর্মসূচীতে নতুন অগ্রগতি
২০২৫ সালের শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবসকে আরও বর্ণাঢ্য, যথাযোগ্য মর্যাদা ও বিস্তৃতভাবে পালন করতে সরকার আগাম বরাদ্দ মঞ্জুর করেছে।
সরকারি আদেশ নং ৫২, ০৬-১১-২৫ অনুযায়ী—
জাতীয় পর্যায় থেকে শুরু করে বিভাগ, জেলা, উপজেলা ও ইউনিয়ন পর্যায়েও এই দিবস উপলক্ষে কর্মসূচী বাস্তবায়ন করা হবে।
কোন কোন কর্মসূচীতে বরাদ্দ ব্যয় হবে?
👇 মূলত নিম্নোক্ত কর্মসূচীগুলো বাস্তবায়নে বরাদ্দ ব্যবহার করা হবে—
-
শহীদ মিনারে পুষ্পস্তবক অর্পণ
-
মিরপুর বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে রাষ্ট্রীয় শ্রদ্ধাঞ্জলি
-
আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিল
-
মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসভিত্তিক প্রদর্শনী
-
ডকুমেন্টারি ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান
-
জেলা-উপজেলায় স্মৃতিফলকে শ্রদ্ধা নিবেদন
-
নিরাপত্তা এবং সার্বিক সহযোগিতা প্রদান
এসব কর্মসূচী সারাদেশে একইসঙ্গে পালিত হবে।
রাষ্ট্রীয় পর্যায়ের উচ্চ নিরাপত্তা ব্যবস্থা
রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রীসহ গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের উপস্থিতি থাকায়—
-
নিরাপত্তা বাহিনী
-
গোয়েন্দা সংস্থা
-
ফায়ার সার্ভিস
-
স্বাস্থ্য টিম
—সমন্বিতভাবে দায়িত্ব পালন করবে।
এছাড়াও গণমাধ্যম ও অনলাইন প্ল্যাটফর্মসমূহে ব্যাপক প্রচার নিশ্চিত করা হবে।
নতুন প্রজন্মের জন্য এই দিবস কতটা প্রাসঙ্গিক?
বর্তমান তরুণ প্রজন্ম নিয়মিত ইতিহাস জানতে না পারায়—
এই দিবস:
✅ স্বাধীনতার শত্রু ও বীর বুদ্ধিজীবীদের পরিচয় স্পষ্ট করে
✅ দেশপ্রেম ও মূল্যবোধের শিক্ষা দেয়
✅ মেধাবীদের প্রতি জাতির দায়িত্ব স্মরণ করায়
সরকারের নতুন বরাদ্দ ও সম্প্রসারিত কর্মসূচী—
তরুণদের আরও বেশি সম্পৃক্ত করবে।
মানুষের অনুভূতির জায়গা: স্মৃতির অমরতা
প্রতিটি পরিবার, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, সাংবাদিক সমাজ ও সাংস্কৃতিক অঙ্গনের কাছে এ দিবস এক গভীর শোকের দিন।
কারণ, তখন বাংলার—
-
শিক্ষক
-
চিকিৎসক
-
সাংবাদিক
-
লেখক
-
শিল্পী
-
বিজ্ঞানী
— সবার মেধা নির্বিচারে নির্মূল করা হয়েছিল।
শহীদ বুদ্ধিজীবীদের রক্তের বিনিময়ে অর্জিত স্বাধীন বাংলাদেশ আজ উন্নয়নের পথ ধরে এগিয়ে চলেছে।
সরকারের আহ্বান
সরকার ও সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় সবাইকে অনুরোধ করেছে—
এই দিবসে জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তানদের প্রতি শ্রদ্ধা, নম্রতা, ঐক্য এবং শুদ্ধ চিন্তা নিয়ে অংশ নিতে।
.png)