ফ্রান্সে ‘মালিকবিহীন’ বিলাসবহুল সুপারইয়ট এখন মাথাব্যথার কারণ!
bySainik tv-
ফ্রান্সের মার্সেইতে একটি শিপইয়ার্ডে আটকা পড়ে আছে বিলাসবহুল সুপরইয়ট ‘আমোর ভেরো’৷
ফরাসি কর্তৃপক্ষ বলছে, জব্দকৃত ইয়টটি এক রুশ ধনকুবেরের। কিন্তু তিনি এর মালিকানা অস্বীকার করছেন।
২৮২ ফুট দৈর্ঘ্য, সাতটি ক্যাবিনের বিলাসবহুল সুপারইয়ট ‘আমোর ভেরো’৷ দাম ১২ কোটি ডলার। সেটি পড়ে আছে এখন ফ্র্যাঞ্চ রিভেরা উপকূলের একটি শিপইয়ার্ডে
গত ২ মার্চ রাতে ফরাসি শুল্ক কর্তৃপক্ষ জাহাজটি জব্দ করে।
ফ্রান্সের অর্থ মন্ত্রণালয়ের দাবি, জাহাজটি রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় তেল কোম্পানি রসনেফটের প্রধান ইগোর সেচিনের নিয়ন্ত্রণাধীন একটি কোম্পানির। পুতিন সরকারের ঘনিষ্ঠ হিসেবে সেচিনের উপর নিষেধাজ্ঞা দিয়েছিল ইউরোপীয় ইউনিয়ন। সেই নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে জাহাজটি বন্দর ছাড়ার প্রস্তুতি নিলে সেটিকে জব্দ করে ফরাসি কর্তৃপক্ষ।
তবে রসনেফটের মাধ্যমে রয়টার্সকে পাঠানো এক বিবৃতিতে ইগোর সেচিন এই জাহাজের মালিকানার কথা অস্বীকার করেছেন।
ইয়টটি ফরাসি উপকূলে আনা হয়েছিল মেরামতের জন্য। শিপইয়ার্ড কর্তৃপক্ষ জাহাজটির নামে প্রতিদিন ভাড়া বাবদ বিল তৈরি করে যাচ্ছে। কিন্তু সেটি কার কাছে পাঠাবে তা তারা জানে না।
কারা এটির দেখভাল করবে আর পাওনা কারা মেটাবে তা নিয়েও দেখা দিয়েছে জটিলতা। শিপইয়ার্ড কর্তৃপক্ষ শুল্ক দপ্তরের কাছ থেকেও এ সংক্রান্ত কোনো তথ্য পাচ্ছে না।
এদিকে, ফ্রান্সে ইয়টটি মেরামতের দায়িত্বে থাকা প্রতিষ্ঠানও ‘আমোর ভেরো’ এর আইনগত অবস্থা সম্পর্কে নিশ্চিত হতে পারছে না। এ বিষয়ে তারা শুল্ক কর্তৃপক্ষের কাছে জানতে চেয়ে চিঠি দিয়েছে বলে রয়টার্সকে জানিয়েছে। কেননা এর সঙ্গে তাদের পাওনার বিষয়টিও জড়িত।
সমুদ্র আইন বিষয়ক বিশেষজ্ঞ প্যাসকাল ফ্লট রয়টার্সকে জানিয়েছেন, জাহাজটির প্রকৃত মালিক কে সেটি নির্ধারণে জটিলতার কারণেই হয়ত ফরাসি কর্তৃপক্ষ আইনগত অবস্থাটি ব্যাখ্যা করছে না। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই অতিধনীরা নিজেদের পরিচয় লুকিয়ে বেনামী কোম্পানির নামে এসব ইয়ট কিনে থাকে। এসব কোম্পানি নিবন্ধিত থাকে কর স্বর্গখ্যাত বিভিন্ন অঞ্চলে। আমোর ভেরো কেইম্যান দ্বীপপুঞ্জে নিবন্ধিত বলে জানা গেছে। তবে এ বিষয়ে রয়টার্সকে কিছু জানাতে রাজি হয়নি শুল্ক দপ্তর।
ইউক্রেনে হামলার পর রাশিয়ার বিভিন্ন ব্যক্তিবর্গের উপর দেয়া নিষেধাজ্ঞার আওতায় ইউরোপীয় ইউনিয়ন এমন অন্তত ১১টি সুপারইয়ট জব্দ করেছে। বিশ্বে এমন সব সুপাইয়টের অন্যতম ক্রেতা রুশ ধনকুবেররা। বিক্রি হওয়া প্রতি ১০টি সুপারইয়টের একটির মালিক তারা। কর ফাঁকি দিতে বিলাসবহুল এসব জাহাজ তারা সুবিধামতো উপকূলে নোঙ্গর করে রাখেন।
সূত্র: ডয়চে ভেলে ও রয়টার্স।