মুক্তিযুদ্ধে অংশ নিয়েও নেই তালিকায় নাম।জীবনবাজি রেখে মহান মুক্তিযুদ্ধে অংশ নিয়ে দেশ স্বাধীন করলেও স্বাধীনতার অর্ধশত বছর অতিবাহিত হলেও মুক্তিযোদ্ধার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হতে পারেনি বেশ কিছু মুক্তিযোদ্ধা। স্বাধীন সার্বভৌম এই রাষ্ট্রে এমন অনেকেই পৃথিবী থেকে বিদায় নিয়েছেন। আর কেউ কেউ বেঁচে থাকলেও বুকে যন্ত্রণা নিয়ে ধুকে ধুকে গুনছেন জীবনের শেষ প্রহর।
দিনাজপুরের বিরল উপজেলার নরেশ চন্দ্র রায়। মানুষের বাড়ীতে কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করলেও ১৯৭১ সালে ২৩ বছরের টগবগে বয়সে বঙ্গবন্ধুর ডাকে অংশ নিয়েছিলেন মহান মুক্তিযুদ্ধে। ভারতের শিববাড়ী ইয়ুথ ক্যাম্পে প্রশিক্ষন নেয়ার পর ৩০৩ রাইফেল নিয়ে পাক সেনাদের বিরুদ্ধে লিপ্ত হন সশস্ত্র যুদ্ধে। ৭নং সেক্টরের অধীনে ডুংডুংগি, পলাশবাড়ীসহ বিরলের বিভিন্ন এলাকায় অংশ নেন সম্মুখ যুদ্ধে। যুদ্ধ শেষে দিনাজপুরের আনন্দ সাগর এলাকায় অস্ত্র জমা দেন ক্যাপ্টেন শাহরিয়ার কাছে।কিন্তু তার সহযোদ্ধারা মুক্তিযোদ্ধার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হলেও ঠিকমতো যোগাযোগ করতে না পারায় আজও মুক্তিযোদ্ধার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হয়নি নরেশ চন্দ্রের নাম। জীবন সায়াহ্নে এসে পক্ষাঘাতগ্রস্ত হয়ে এখন শয্যাশায়ী এই বীর মুক্তিযোদ্ধা। বুকে যন্ত্রণা নিয়েই গুনছেন মৃত্যুর প্রহর। তার পরিবারের সদস্যদের দাবী জীবনের প্রদীপ নেভার আগেই মুক্তিযোদ্ধার তালিকায় এই মানুষটির নাম মুক্তিযোদ্ধার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করার। নরেশ চন্দ্র রায়ের প্রতিবেশীরা জানান, মহান মুক্তিযুদ্ধে অংশ নিলেও অবহেলিত পরিবারের সদস্য হওয়ায় তার নাম মুক্তিযোদ্ধার তালিকায় অন্তভুক্ত হয়নি। কি কারনে এবং কেন নরেশ চন্দ্র রায়ের তালিকায় নাম নেই? এমন প্রশ্ন তাদের। বিরল উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা ডেপুটি কমান্ড রহমান আলী বলেন, নরেশ চন্দ্র রায়ের মহান মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেয়ার কথা। বিরল উপজেলা থেকে যেসব মুক্তিযোদ্ধার নাম পাঠানো হয়েছিলো-সেখানে নরেশ চন্দ্রের নাম ছিলো উল্লেখ করে বিরল উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের এই নেতা দাবি করেন তাকে মুক্তিযোদ্ধার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করার।
যাদের আত্মত্যাগে এই স্বাধীন সার্বভৌম রাষ্ট্র। সেই স্বাধীন রাষ্ট্রে অন্তত আগামী প্রজন্মের কাছে তাদের অবদান ধরে রাখার জন্য প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধার নাম তালিকায় অন্তর্ভুক্ত থাকুক-এমন প্রত্যাশা সকলের।
সূত্রঃএবিনিউজ২৪.কম