পাবনায় মুক্তিযোদ্ধা সাইফুল ইসলাম বাবলু ও তার সহযোগী কর্তৃক মুক্তিযোদ্ধা সংসদের একচ্ছত্র নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা এবং বীর মুক্তিযোদ্ধাদের কাছ থেকে জোরপূর্বক চাঁদাবাজি-হয়রানির অভিযোগের প্রতীকার চেয়ে সাত দফা দাবিতে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেছেন ভুক্তভোগী বীর মুক্তিযোদ্ধারা।
ছবিঃসংগৃহীত |
সোমবার (১৪ নভেম্বর) দুপুরে পাবনা জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের জেলা ইউনিট কমান্ডের সামনে এ মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করা হমানববন্ধনে সাত দফা দাবি পেশ করা হয়।
দাবিগুলো হলো- পাবনা সদর উপজেলা বীর মুক্তিযোদ্ধা যাচাই-বাছাই কমিটি থেকে পাবনা জেলা প্রশাসকের প্রতিনিধি চাঁদাবাজ ও দুর্নীতিবাজ মুক্তিযোদ্ধা সাইফুল আলম বাবলুর নাম প্রত্যাহার করতে হবে, পাবনার বীর মুক্তিযোদ্ধাদের কাছ থেকে জেরাপূর্বক চাঁদা আদায় বন্ধ করতে হবে, ২০১৪ সালে অনলাইনে আবেদনকৃত মুক্তিযোদ্ধা ও ২৪২ জনের নামে অভিযোগকৃত বীর মুক্তিযোদ্ধাদের পাবনা সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়ে ২০১৬ সালে যাচাই-বাছাইকৃত তালিকা অবিলম্বে মুক্তিযোদ্ধা মন্ত্রণালয়ে পাঠাতে হবে, মুক্তিযোদ্ধা মন্ত্রণালয়ের প্রজ্ঞাপনে পাবনার বিভিন্ন বৈধ গেজেটভুক্ত নয়জন বীর মুক্তিযোদ্ধার বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগে জামুকায় আবেদনকৃত আগামী ১৬ নভেম্বরও যাচাই-বাছাই ও হয়রানি বন্ধ করতে হবে, পাবনার চাঁদাবাজ ও দুর্নীতিবাজ মুক্তিযোদ্ধা সাইফুল আলম বাবলু চক্রের ষড়যন্ত্রমূলক অভিযোগে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের গেজেট-সনদ বাতিল আদেশের গেজেট ও ভাতা বন্ধের আদেশ অবিলম্বে প্রত্যাহার করে নিতে হবে, হাইকোর্ট ও সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের রায়ের বিরুদ্ধে সব রকম বেআইনি পদক্ষেপ বন্ধ করতে হবে এবং চাঁদাবাজ ও দুর্নীতিবাজ মুক্তিযোদ্ধা সাইফুল আলম বাবলুসহ তার সহযোগীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে।মানববন্ধনে বীর মুক্তিযোদ্ধারা বলেন, সাইফুল ইসলামা বাবলু দীর্ঘদিন ধরে মুক্তিযোদ্ধা সংসদের নিয়ন্ত্রণ নিতে নানা অপকর্ম করে আসছেন। তার মতের বিরুদ্ধচারণ করলেই তিনি মুক্তিযোদ্ধাদের বিরুদ্ধে লেগে পড়েন এবং অসত্য অভিযোগ করে নানাভাবে মুক্তিযোদ্ধাদের হয়রানি করেন।একইসঙ্গে মুক্তিযোদ্ধাদের বিড়ম্বনায় ফেলে তা সমাধান করে দেওয়ার জন্য মোটা অংকের টাকা উৎকোচ নেন। তার এ অপকর্ম পাবনায় প্রকাশ্য ঘটনা। ভুক্তভোগী মুক্তিযোদ্ধারাও সাইফুল ইসলাম বাবলুর ষড়যন্ত্রের শিকার বলে দাবি করেন তারা। একইসঙ্গে সাইফুল ইসলাম বাবলুর শাস্তিও দাবি করেন তারা।
তারা আরও অভিযোগ করেন, মুক্তিযোদ্ধা যাচাই-বাছাইয়ের অন্যতম প্রধান শর্ত লাল মুক্তিবার্তা ও বিভিন্ন গেজেটে তাদের নাম অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। যাচাই-বাছাইয়ের বিভিন্ন ধাপ পার হয়ে তারা দীর্ঘদিন ধরে মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মানী ভাতা ও অন্যান্য সুবিধাদি পেয়ে আসছেন। গত ২৩ আগস্ট জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিলে তাদের সাক্ষাৎকার নেওয়া হয়েছে। তারপর থেকে বিভিন্ন সময়ে মুক্তিযোদ্ধা সাইফুল ইসলাম বাবলু ও তার সহযোগী কর্তৃক অনেক মুক্তিযোদ্ধার নামে অসত্য অভিযোগ জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিলে দাখিল করে ভাতা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। এরইমধ্যে গত ২৬ অক্টোবর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা স্বাক্ষরিত চিঠিতে মুক্তিযোদ্ধাদের আবারও যাচাই-বাছাইয়ের জন্য ডাকা হয়েছে, যা আমাদের জন্য অপমানজনক।
পাবনা মুক্তিযোদ্ধা হয়রানি প্রতিরোধ কমিটির যুগ্ম-আহ্বায়ক বীর মুক্তিযোদ্ধা নাসির উদ্দিনের সভাপতিত্বে বক্তব্য দেন মুক্তিযোদ্ধা সংসদের পাবনা সদর উপজেলা ইউনিটের সাবেক কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা আবুল কাসেম বিশ্বাস, বীর মুক্তিযোদ্ধা এবাদত আলী, বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুর রশিদ ও বীর মুক্তিযোদ্ধা আবদুল জব্বার প্রমুখ।
মানববন্ধনে ঘোষিত ৭ দফা দাবি আগামী ৩০ নভেম্বরের মধ্যে পূরণ করা না হলে পাবনা থেকে কঠোর আন্দোলন কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে বলেও হুঁশিয়ারি দেন ভুক্তভোগী বীর মুক্তিযোদ্ধারা।
সূত্র ঃ বাংলা নিউজ ১৫ নভেম্বর ২০২২।