গাজা শান্তি সম্মেলনে ইতালির প্রধানমন্ত্রীকে ‘সুন্দরী’ বললেন ট্রাম্প: সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তোলপাড়!

 গাজা শান্তি সম্মেলনে আলোচনার চেয়ে বেশি আলোচনায় উঠে এসেছেন সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের মন্তব্য। সম্মেলনে উপস্থিত ইতালির প্রধানমন্ত্রী জর্জিয়া মেলোনিকে তিনি প্রকাশ্যে ‘একজন সুন্দরী নারী’ বলে সম্বোধন করেন। তার এই মন্তব্যে উপস্থিত কূটনীতিক ও অতিথিদের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা যায়। কেউ হাসিমুখে প্রতিক্রিয়া জানালেও অনেকেই একে কূটনৈতিক অনুপযুক্ত মন্তব্য হিসেবে সমালোচনা করছেন। গাজা অঞ্চলের মানবিক সংকট ও যুদ্ধবিরতি নিয়ে আলোচনার জন্য অনুষ্ঠিত এই সম্মেলনে ট্রাম্পের এমন বক্তব্য মূল আলোচনার কেন্দ্র থেকে দৃষ্টি সরিয়ে নিয়েছে বলে বিশ্লেষকদের মত। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে মুহূর্তটি দ্রুত ভাইরাল হয়ে যায়। 

সুন্দরী প্রধানমন্ত্রী!’ ট্রাম্পের মন্তব্যে আলোড়ন গাজা শান্তি সম্মেলনে


গাজা শান্তি সম্মেলনে ট্রাম্পের ‘সুন্দরী’ মন্তব্যে আলোড়ন 


গাজা অঞ্চলের যুদ্ধবিরতি ও মানবিক সহায়তা নিয়ে অনুষ্ঠিত শান্তি সম্মেলনে ঘটে অপ্রত্যাশিত এক মুহূর্ত। সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প মঞ্চে বক্তৃতাকালে ইতালির প্রধানমন্ত্রী জর্জিয়া মেলোনিকে ‘একজন অসাধারণ সুন্দরী নারী’ বলে সম্বোধন করেন।

 ট্রাম্পের মন্তব্য ও মুহূর্তটির বিবরণ

সূত্র মতে, ট্রাম্প সম্মেলনে বক্তব্য রাখার সময় বলেন—

“আমরা এখানে গাজায় শান্তির কথা বলছি, আর আমাদের মাঝে রয়েছেন এক অসাধারণ সুন্দরী প্রধানমন্ত্রী — জর্জিয়া মেলোনি।”

এই মন্তব্যের পর পুরো হলে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা যায়। কেউ হাসলেন, কেউ আবার বিস্মিত দৃষ্টিতে তাকালেন। সংবাদমাধ্যমের ক্যামেরায় মুহূর্তটি বন্দি হয়ে সঙ্গে সঙ্গে ছড়িয়ে পড়ে বিশ্বজুড়ে।  

 কূটনৈতিক পরিমণ্ডলে প্রতিক্রিয়া

ইউরোপীয় কূটনীতিকদের একাংশ মনে করছেন, ট্রাম্পের মন্তব্য “অনাবশ্যক ও কূটনৈতিকভাবে অনুপযুক্ত”।
গুরুত্বপূর্ণ আলোচনার মধ্যে এমন ব্যক্তিগত মন্তব্য শান্তি আলোচনার গুরুত্বকে আড়াল করে দিয়েছে।
অন্যদিকে, ট্রাম্পের সমর্থকরা বলছেন— তিনি শুধু বন্ধুত্বপূর্ণ ভঙ্গিতে প্রশংসা করেছেন, এটিকে বড় করে দেখার কিছু নেই।

 সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ঝড়

মুহূর্তটির ভিডিও ক্লিপ টুইটার (এক্স), ইনস্টাগ্রাম ও ইউটিউবে ভাইরাল হয়ে যায়।
#Trump #Meloni #GazaPeaceSummit হ্যাশট্যাগ ব্যবহার করে লাখো মানুষ তাদের মতামত জানাচ্ছে।
অনেকে একে ‘হাস্যকর’ বলে আখ্যা দিয়েছেন, আবার কেউ কেউ বলেছেন— “ট্রাম্প তার পুরনো স্টাইলেই ফিরেছেন।”
এমনকি ইতালিতেও এই মন্তব্যকে ঘিরে রাজনৈতিক বিতর্ক শুরু হয়েছে।

 ইতালির প্রধানমন্ত্রী মেলোনির প্রতিক্রিয়া

মেলোনি নিজে যদিও প্রকাশ্যে কোনো মন্তব্য করেননি, তার দলের এক মুখপাত্র বলেন—
“প্রধানমন্ত্রী সম্মেলনের উদ্দেশ্যকে সম্মান করেন। তিনি গাজার মানবিক সংকট ও শান্তি স্থাপনের বিষয়কেই সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়েছেন।”
অর্থাৎ, ট্রাম্পের মন্তব্যে ইতালি সরাসরি প্রতিক্রিয়া না দিয়ে মূল আলোচনায় মনোযোগ রাখার চেষ্টা করেছে।

 গাজা শান্তি সম্মেলনের মূল উদ্দেশ্য

এই সম্মেলনের মূল উদ্দেশ্য ছিল গাজায় মানবিক সহায়তা বৃদ্ধি, যুদ্ধবিরতি নিশ্চিত করা ও পুনর্গঠন তহবিল গঠন।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপীয় ইউনিয়ন, জাতিসংঘসহ বিভিন্ন দেশের প্রতিনিধিরা এতে অংশ নেন।
তবে ট্রাম্পের অপ্রত্যাশিত মন্তব্য মূল আলোচনার অনেকটা দৃষ্টি সরিয়ে নেয়।

বিশ্লেষকদের মত

রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, ট্রাম্প প্রায়ই এমন মন্তব্য করে জনসমক্ষে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে আসেন।
তবে গাজা সংকটের মতো সংবেদনশীল ইস্যুতে এ ধরনের মন্তব্য অনেকের কাছে দায়িত্বজ্ঞানহীন মনে হয়েছে।
তারা মনে করেন, এটি আবারও দেখিয়ে দিলো ট্রাম্পের কূটনৈতিক ভাষণ কতটা বিতর্কিত হতে পারে।

গাজা শান্তি সম্মেলনে ট্রাম্পের মন্তব্য হয়তো তার নিজস্ব ভঙ্গিমা, কিন্তু এই ঘটনা আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে আলোড়ন তুলেছে।
যেখানে গাজায় নিরীহ মানুষের প্রাণহানি ও মানবিক বিপর্যয় চলছে, সেখানে এমন মন্তব্যকে অনেকেই অপ্রাসঙ্গিক বলে মনে করছেন।
তবে এটি ট্রাম্পকে আবারও আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে ফিরিয়ে এনেছে— সেটাই হয়তো তার উদ্দেশ্য ছিল!


নবীনতর পূর্বতন

যোগাযোগ ফর্ম