একাত্তরের মুক্তিযোদ্ধা সংসদের চেয়ারম্যান লেখক গবেষক আবীর আহাদ বলেছেন, সরকার সব শ্রেণীর শহীদ, মৃত ও জীবিত বীর মুক্তিযোদ্ধাদের বছরে দু'টি উৎসব ভাতা হিসেবে ১০+১০ করে ২০ হাজার টাকা এবং সেই সাথে জীবিত খেতাবপ্রাপ্ত, যুদ্ধাহত ও সাধারণ বীর মুক্তিযোদ্ধাদের বিজয় দিবস ভাতা হিসেবে ৫ হাজার টাকা ও ২ হাজার করে বাংলা নববর্ষ ভাতা দিয়ে আসছেন।
কিন্তু দু:খজনক সত্য এই যে, শহীদ ও মৃত বীর মুক্তিযোদ্ধারা বিজয় দিবস ও নববর্ষ ভাতা পাচ্ছেন না! জীবিত সব বীর মুক্তিযোদ্ধার পাশাপাশি শহীদ ও মৃত বীর মুক্তিযোদ্ধারাও বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সমমর্যাদায় রাষ্ট্র প্রদত্ত সব ভাতা ও সুবিধাদি পাওয়ার অধিকার রাখেন। শহীদ ও মৃত বীর মুক্তিযোদ্ধা পরিবার যখন মুক্তিযোদ্ধা মাসিক সম্মানী, ঈদুল আজহা ও ঈদুল ফিতর ভাতা পেয়ে থাকেন, তখন একইভাবে তারাও বিজয় দিবস ও নববর্ষ ভাতা পাওয়ার অধিকার রাখেন।
ছবি ঃ সংগৃহীত |
গতকাল রবিবার এক বিবৃতিতে উপরোক্ত মন্তব্য করে আবীর আহাদ বলেন, রাষ্ট্র অন্তত: কারো সাথে বৈষম্যমূলক আচরণ করতে পারেন না। বিশেষ করে যাদের সীমাহীন শৌর্য ত্যাগ ও বীরত্বে অর্জিত এ স্বাধীন বাংলাদেশ, সেই বীর মুক্তিযোদ্ধাদের কাউকে কাউকে কিছু দেয়া হবে, কাউকে কাউকে কিছু থেকে বঞ্চিত করা হবে, এ-আচরণ শুধু বৈষম্যই নয়, এটা একধরনের বেদনাদায়ক অবজ্ঞার পর্যায়ে পড়ে! কিন্তু রাষ্ট্র কারো প্রতি বৈষম্য ও অবজ্ঞা প্রদর্শন করতে পারে না। এ কারণেই আমরা একাত্তরের মুক্তিযোদ্ধা সংসদের পক্ষ থেকে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী সমীপে পেশকৃত স্মারকলিপির মধ্যে এ দাবি সন্নিবেসিত করা হয়েছে। সেই স্মারকলিপির ওপর গত কয়েক মাস পূর্বে আমাদের সাথে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রীর আনুষ্ঠানিক মতবিনিময় সভায় মন্ত্রী মহোদয়ও মুক্তিযোদ্ধা গৃহঋণ, চিকিত্সা ভাতা এবং শহীদ ও মৃত বীর মুক্তিযোদ্ধাদের বিজয় ও বৈশাখী ভাতা প্রদানের জন্য সরকার নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলে জানিয়েছেন। আমরা এসবের বাস্তবায়ন দেখতে চাই।
আবীর আহাদ বলেন, জীবিত মুক্তিযোদ্ধারা প্রায় সবাই আর্থিকভাবে অনেক দু:খ-কষ্টের মধ্যে আছেন, কিন্তু মুক্তিযুদ্ধে শহীদ ও পরবর্তীতে মৃত মুক্তিযোদ্ধাদের পরিবার জীবিত মুক্তিযোদ্ধাদের চাইতেও অধিক দু:খ-কষ্টের ভেতর দিয়ে চরম মানবেতর জীবনযাপন করে আসছেন তা বলাই বাহুল্য। সুতরাং জীবিত মুক্তিযোদ্ধারদের মতো শহীদ ও মৃত মুক্তিযোদ্ধার পরিবারাকেও একই দৃষ্টিকোণ থেকে রাষ্ট্র প্রদত্ত সব ভাতার আওতায় আনা রাষ্ট্র ও সরকারের নৈতিক দায়িত্ব।
আবীর আহাদ এ-বিষয়ে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার ব্যক্তিগত হস্তক্ষেপ কামনা করে বলেন, নিশ্চয়ই বঙ্গবন্ধু-কন্যা তাঁর সহজাত মানবিক গুণাবলীর বিবেচনায় মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য রাষ্ট্র প্রদত্ত সব ভাতা জীবিত, শহীদ ও মৃত নির্বিশেষে সব মুক্তিযোদ্ধাকে সমমর্যাদার আলোকে প্রদান করার ব্যবস্থা করবেন বলে আশাবাদ ব্যক্ত করছি।