সরকারি সম্পত্তি অবৈধ দখলের ঠেকাতে ডিসির কাছে আবেদন মুক্তিযোদ্ধার

 

দরখাস্তের সূত্রে জানা গেছে, বিআরএস জরিপের চূড়ান্ত প্রকাশিত তালিকা পর্যালোচনা করে নিম্নবর্ণিত দাগ খতিয়ানের সম্পত্তিসমূহ স্থানীয় কিছু অসাধুচক্র প্রতারণামূলকভাবে জাল জালিয়াতির মাধ্যমে ভুয়া দলিল সৃজন করে নিজ নামে রেকর্ডভুক্ত করে ইমারত নির্মাণসহ অবৈধভাবে হস্তান্তরের চেষ্টা করছে। মাদারীপুর মোতালক ১০৭নং পানিছত্র মৌজায় এসএ ২০৪নং খতিয়ানে ২৪৮ দাগে জমি ১০ একর যা গেজেটে ১৭ নং ক্রমিকে এসএ খতিয়ান ঠিক আছে, কিন্তু দাগ ২৪৮ এর স্থলে ভ্রান্তিবশতঃ ২০ লেখা হয়েছে। ঐ মৌজায় এসএ ১৮৬ খতিয়ানে ২৪১ দাগে জমি ২০-২ একর যা গেজেটে ২৩নং ক্রমিকে ১৮৬ এসএ খতিয়ান ঠিকমত লেখা হয়, কিন্তু ২৪১নং দাগের পরিবর্তে ভুলে ২০০ দাগ লেখা হয়েছে। উল্লেখ্য ওই খতিয়ানে ২০০ কোন দাগ নেই। ঐ মৌজায় আরএস ২৮৫ নং এসএ ২০৫ নং খতিয়ানে ২২৩ দাগে জমি ৩১ একর গেজেট তালিকায় দেখা যায় ৬নং ক্রমিকে আরএস খতিয়ান উল্লেখ করা হয়েছে। এসএ ২০৫ খতিয়ান লিপিবদ্ধ নাই। উক্ত খতিয়ান ও দাগের সম্পত্তিগুলো প্রচলিত আইনানুসারে সরকারি সম্পত্তি। যা প্রতারনামূলকভাবে সংঘবদ্ধ প্রতারকগোষ্ঠী ও ভূমিদস্যুরা অবৈধ দখল ও হস্তান্তর করে সরকারি স্বার্থ চরমভাবে ক্ষুণ্ণ করছে। একজন সচেতন নাগরিক হিসেবে এধরনের জালিয়াতির বিরুদ্ধে কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা প্রয়োজন বলে ওই নারী বীর মুক্তিযোদ্ধা মনে করেন ।


মাদারীপুর জেলা সাব-রেজিস্টার অফিস ও এলাকাবাসীর সূত্রে জানা গেছে, মাদারীপুর জেলার সদর উপজেলা বিএনপি'র সদস্য সচিব ও জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরাম মাদারীপুর শাখার সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট গোলজার আহমেদ চিশতি (মোস্তফা) ১৯৬১ সালের ৬৩৩৬ নম্বরের দলিল সৃষ্টি করে দখল করেছেন সরকারি (অর্পিত) সম্পত্তি। গোলজার চিশতি প্রতারণামূলকভাবে মাদারীপুর পৌরসভার পানিছত্র মৌজার এসএ ২২৩ দাগের ১৮ শতাংশ জমি ভুয়া দলিলের মাধ্যমে দখল করে নেন। অনুসন্ধানে দেখা যায়, ছিলারচর মৌজার ১৯৬১ সালের ৬৩৩৬ নম্বরের প্রকৃত দলিলের দাতা-হরিচরণ মন্ডল, গ্রহীতা-শুকুর মাহমুদ সরদার ও কালাচান সরদার। কিন্তু তার সৃষ্ট দলিলের জমির দাতা, গ্রহীতা ও মৌজা পুরোপুরি ভিন্ন। ভুয়া দলিল সৃজনের ক্ষেত্রে তিনি "গোলাম চিশতি" নামে কল্পিত ব্যক্তির সৃষ্টি করেন। পরবর্তীকালে কিছু অসাধু কর্মকর্তাদের সহায়তায় নিজেই ঐ কল্পিত ভাইয়ের কাছ থেকে হেবা দলিল (দলিল নং- ৩২৭/৯৮) করে এসএ রেকর্ডে থাকা সরকারি অর্পিত সম্পত্তি নিজের নামে মিউটেশন ও রেকর্ড সংশোধন করে নেন। এই হেবা দলিলের সই মুহুরী দলিল পর্যালোচনায় ১৯৬১ সালের ৬৩৩৬ নং দলিলের গ্রহীতা হিসেবে তার ভাই "গোলাম চিশতি" এর উল্লেখ পাওয়া যায়। যদিও স্থানীয় অধিবাসী ও নিকটাত্মীয়দের জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, গোলজার আহমেদ চিশতিরা তিন ভাই। তাদের কারোর নামই "গোলাম চিশতি" নয়। জাল জালিয়াতির আশ্রয় নিয়ে দলিল তৈরির পাশাপাশি আরও দলিল সৃষ্টির উদ্দেশ্যে জনৈক আইরিন আফরোজ মুন্নির সঙ্গে বায়নাপত্র করে আদালতে মামলা করিয়ে সরকারি ঐ জমির থেকে ১৪.৮৫ শতাংশ জমি ৩৮৭০/১৩ দলিল মূলে বিক্রি করে দেন। এছাড়া ১৯৬১ সালের ৭৩২২ নং ভুয়া দলিলের মাধ্যমে মাদারীপুর পানিছত্র মৌজার আরও সরকারি জমি তিনি নিজ নামে রেকর্ড করে নিয়েছেন। ১৯৬১ সালের তাং ৭৩২২ নং প্রকৃত দলিলের দাতা- বনা বিবি, গ্রহীতা- মহরজান বিবি ও আনছারদ্দীন হাওলাদার এবং মৌজা- ধুরিয়াইল। মাদারীপুর সদর সাব জজ আদালতে জাল জালিয়াতির মাধ্যমে দখল সংক্রান্ত মামলা চলাকালীন সময়ে তার এই জাল-জালিয়াতির বিষয়টি প্রকাশ পায়। এই মামলা চলাকালীন আদালতে এডভোকেট গোলজার আহমেদ চিশতি (মোস্তফা) তার স্বাক্ষরিত হলফনামায় ১৯৬১ সালের ৬৩৩৬ নং দলিলের কথা উল্লেখ করেন। যদিও ১৯৬১ সনের ৬৩৩৬ নং ও ৭৩২২ নং দলিলের সই মহুরী নকল প্রতিবেদকের নিকট আসলে এই বিষয়ে জেলা রেজিস্ট্রার রুহুল কুদ্দুস শিবলী বলেন, ১৯৬১ সালের ৬৩৩৬ নং দলিল সরকারি বালাম বই অনুসারে পানিছত্র মৌজার নয়। উক্ত নম্বরের দলিল পানিছত্র মৌজার তো নয়ই, এমনকি দাতা গ্রহীতার কেউ “গোলাম চিশতী” নন। ওগুলো ভুয়া দলিল।" এ ব্যাপারে আইরিন আফরোজ মুন্নির সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, আমি টাকা দিয়ে জমি কিনেছি, মিউটেশন করেছি, কোন সরকারি জায়গা দখল করি নাই।

সরকারি সম্পত্তি অবৈধ দখলের ঠেকাতে ডিসির কাছে আবেদন মুক্তিযোদ্ধার



এ বিষয়ে এডভোকেট গোলজার আহমেদ চিশতির সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, আমি কোনো সরকারি জায়গা দখল করিনি।


মাদারীপুর সদর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি ) মো. সাইফুল ইসলামের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন এই বিষয়ে আইনগত পদক্ষেপ গ্রহণ করা হচ্ছে।


নবাগত জেলা প্রশাসক ও জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ মারুফুর রশিদ খানের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, সরকারি সম্পত্তি আত্মসাৎ বা আত্মসাৎ করার চেষ্টা করছে তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে । ইতিমধ্যে সদর উপজেলা সহকারী কমিশনার ভূমিকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে কাগজপত্র যাচাই-বাছাই ও তদন্ত করে আমার কাছে রিপোর্ট পেশ করার জন্য ।

নবীনতর পূর্বতন

যোগাযোগ ফর্ম