বীর মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের বসতভিটা দখলের অভিযোগ।গাইবান্ধা ৩ আসনের (পলাশবাড়ী-সাদুল্যাপুর) সংসদ সদস্য অ্যাডভোকেট উম্মে কুলসুম স্মৃতি ও তার ভাই পলাশবাড়ী পৌরসভার মেয়র গোলাম সারোয়ার বিপ্লবের বিরুদ্ধে মরহুম বীর মুক্তিযোদ্ধা আজিজার রহমানের পরিবারের সদস্যদের নির্যাতন, অর্থ আত্মসাৎ এবং বসতভিটা থেকে অবৈধভাবে উচ্ছেদ করে সম্পদ লুটে নেওয়ার অভিযোগ করেছে ভুক্তভোগী পরিবার।
সোমবার (১৯ জুন) ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির (ডিআরইউ) নসরুল হামিদ মিলনায়তনে এক সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি করা হয়। এ সময় আজিজার রহমানের স্ত্রী সুফিয়া বেগম, ছয় মেয়ে ও তার ছেলে উপস্থিত ছিলেলিখিত বক্তব্যে মুক্তিযোদ্ধাকন্যা শ্যামলী বেগম বলেন, ১৯৬৪ সালে আমার বাবা পলাশবাড়ী পৌরসভার ৫ নং ওয়ার্ডে দুই শতক জমি কিনে বাড়িঘর ও দোকান নির্মাণ করেন। এরপর থেকে আমরা সেই জায়গায় স্বপরিবারে বসবাস করে আসছি। ক্রয়কৃত জমিটির পাশে থাকা সরকারি ছয় শতক খাসজমি দীর্ঘদিন ধরে বীর মুক্তিযোদ্ধা পরিবার হিসেবে আমরা ভোগদখল করে আসছি। যার পৌরকর নিয়মিত পরিশোধ করা হয় এবং যথাযথ কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে বরাদ্ধ পাওয়ার জন্য প্রচেষ্টা অব্যাহত রেখেছি।
এর আগে আমাদের এমপি অ্যাডভোকেট উম্মে কুলসুম স্মৃতি খাস ছয় শতক জমি আমাদের নামে বরাদ্ধ দেওয়ার জন্য ভূমি মন্ত্রণালয়ের দুটি ডিও লেটারও দিয়েছেন। যদিও সে সময় তার বোন ও বোনের জামাই স্থানীয় জামায়েত ইসলামীর নেতা সেকান্দার হাজী সে জন্য চার লাখ টাকা নেন। পরবর্তীতে আরও এক লাখ টাকা এমপি তার নির্বাচনে খরচ করতে বলেন। এরপর তিনি জেলা প্রশাসককে ফোন করে সুপারিশ করেছেন জমিতে আমাদের পরিবারের নামে লিজ দেখার জন্য।ন।অন্যদিকে, এমপি তার ভাই বর্তমান মেয়র গোলাম সারোয়ার বিপ্লবকে আমার পরিবারের বিরুদ্ধে লেলিয়ে দিয়েছেন। তারা এ জমি বরাদ্দ দেওয়ার জন্য আমার পরিবারের কাছে ৫০ লাখ টাকা দাবি করেছে। তখন টাকা না দিলে আমাদের উচ্ছেদ করে সেই জমিতে মার্কেট নির্মাণের কথা বলে।ইতোমধ্যে আমাদের দখলে থাকা জমির মধ্যে থেকে ড্রেন নির্মাণের জন্য চার ফুট জায়গা নেওয়া হয়েছে। সে সময় আমরা জেলা প্রশাসনকে সার্বিক সহযোগিতা করেছি। কিন্তু তারপর থেকেই পৌর মেয়র ৫০ লাখ টাকার জন্য চাপ দিতে থাকে। এরপর ২৫ মে মেয়র ঘরবাড়ি ভেঙে জায়গাটি খালি করে দিতে বলেন। আমরা জরুরি সেবা ৯৯৯ কল করলে পুলিশ আসে, তবে মেয়রর সঙ্গে কথা বলে চলে যায়। এসব বিষয়ে আমরা পলাশবাড়ি থানায় সাধারণ ডায়েরি করি।
এরপর ২৯ মে সকালে মেয়রের ১৫০/১৬০ জন সন্ত্রাসী হ্যামার নিয়ে আমাদের বাড়ির সামনে আসে। পরিবারের সদস্যদের মারধোর করে এবং পাশের ইউনিক কিন্ডার গার্ডেন স্কুল ভবনে নিয়ে আটকে রেখে তালা বন্ধ করে দেয়। এরপর ঘরবাড়ি ভেঙে আমাদের বাসা ও দোকান থেকে প্রায় ২০ লাখ টাকার মালামাল লুট করে নিয়ে যায়।
এরপর পলাশবাড়ী থানায় মামলা দায়ের করার জন্য যাই কিন্তু পুলিশ মামলা নেয়নি। আদালতে গিয়ে মামলা কলার পরামর্শ দেয়। এরপর থেকে আমাদের পুরো পরিবার স্থানীয় এমপি ও মেয়রের সন্ত্রাসীদের ভয়ে এখন পালিয়ে বেড়াচ্ছি।
তিনি বলেন, এটি মধ্যযুগীয় বর্বরতা। আমরা এই ঘটনার তদন্ত ও সুষ্ঠ বিচার দাবি করছি এবং আমাদের ক্ষতিপূরণ দাবি করছি। স্থানীয় এমপি অ্যাডভোকেট উম্মে কুলসুম স্মৃতি ও পৌর মেয়রের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করছি। যাতে ভবিষ্যতে আর কোনো মুক্তিযোদ্ধা পরিবারকে আমাদের মতো এমন লাঞ্চনার শিকার হতে না হয়।
সূত্র জাগোনিউজ২৪
