বীরনিবাস নির্মাণে অনিয়ম নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহার পদে পদে টাকা আদায় অভিযোগ।

 

বীরনিবাস নির্মাণে অনিয়ম নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহার পদে পদে টাকা আদায় অভিযোগ। 


আদমদীঘি উপজেলায় বীর মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য নির্মিত আবাসস্থল ‘বীরনিবাস’-এর নির্মাণকাজে নিম্নমানের উপকরণ ব্যবহার ও চরম ধীরগতির অভিযোগ পাওয়া গেছে। তিন মাস সময়সীমা বেঁধে দেওয়া হলেও ১০ মাস পেরিয়ে গেলেও নির্মাণকাজ শেষ হয়নি। 

বীরনিবাস নির্মাণে অনিয়ম নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহার পদে পদে টাকা আদায় অভিযোগ।


অনেক বাড়ি হস্তান্তরের আগেই ফাটল ধরেছে, পলেস্তারা খসে পড়ছে। এতে বীর মুক্তিযোদ্ধারা ক্ষোভ প্রকাশ করছেন।উপজেলায় দ্বিতীয় পর্যায়ে ৩২ জন অসচ্ছল বীর মুক্তিযোদ্ধার জন্য বীরনিবাস বরাদ্দ দেওয়া হয়। মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয় প্রতিটি বীরনিবাসে তিনটি কক্ষ, দুটি বাথরুম, একটি রান্নাঘর ও একটি খাবার কক্ষ নির্মাণে ১৪ লাখ ১০ হাজার ৩৮২ টাকা করে বরাদ্দ দেয়। ট্রেন্ডারের মাধ্যমে মেসার্স সুমা এন্টারপ্রাইজ ১৬টি ও স্বপ্নিল ইঞ্জিনিয়ার ট্রেডার্স ১৬টি বীরনিবাস নির্মাণকাজ পায়।

অনেকে বাদ পড়েছেন মুক্তিযুদ্ধের খেতাব প্রাপ্য মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী

 ২০২৩ সালের ১০ জানুয়ারি সারাদেশে দ্বিতীয় পর্যায়ের বীরনিবাস নির্মাণকাজের উদ্বোধন করা হয়। এপ্রিল মাসে মুক্তিযোদ্ধাদের ঘর বুঝিয়ে দেওয়ার কথা, কিন্তু এখন পর্যন্ত নির্মাণকাজ শেষ হয়নি।এদিকে উদ্বোধনের পর বেশির ভাগ মুক্তিযোদ্ধা পুরোনো ঘর ভেঙে বীরনিবাসের জন্য জায়গা ছেড়ে দেন। বাড়ি ভাঙার পর পরিবার নিয়ে জায়গার পাশে কেউ টিনের বেড়া দিয়ে, আবার কেউ অন্যের বাড়িতে মাথা গোঁজার ঠাঁই করে নেন। কিন্তু এখনও ঘরের কাজ শেষ না হওয়ায় বিপাকে পড়েছেন তারা। অভিযোগ রয়েছে, বীরনিবাসের কাজ শুরুর পর থেকেই ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান শিডিউল অনুযায়ী কাজ করছে না।

 নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহার, সংশ্লিষ্ট বীর মুক্তিযোদ্ধাদের ব্ল্যাকমেইল করে পদে পদে টাকা আদায় করছে তারা।শিরিস ব্যবহার না করেই দায়সারাভাবে রঙের কাজ করা হচ্ছে। অধিকাংশ বীরনিবাসের দরজা বাঁকা ও ত্রুটিযুক্ত। মুক্তিযোদ্ধা আবেদ আলী জানান, স্বপ্নিল ইঞ্জিনিয়ার ট্রেডার্স তাঁর কাছ থেকে নির্মাণসামগ্রী বহন খরচ বাবদ টাকা নেয়। এরপরও নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহার করা হয়েছে। ফলে কাজ শেষ না হতেই দেয়ালে ফাটল দেখা দিয়েছে। ছাদ ঢালাই দেওয়ার পর দুই মাস ধরে কাজ বন্ধ রাখা হয়েছে।প্রয়াত মুক্তিযোদ্ধার স্ত্রী ফাতেমা বেগম জানান, তাঁর ঘরের ভিত থেকে বিভিন্ন স্থানে বড় বড় ফাটল দেখা দিয়েছে। কেউ দেখতেও আসে না। অভিযোগ করেও কোনো লাভ হয়নি। নবীর উদ্দিন, আব্দুর রাজ্জাক, ইদ্রিছ আলী, আব্দুস ছাত্তারসহ একাধিক মুক্তিযোদ্ধা জানান, বীরনিবাস নির্মাণকাজ কিছুটা এগিয়ে গেলেও নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহার হয়েছে। অনেক স্থানে পলেস্তারা উঠে গেছে। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে বলা হলে তারা টাকা দাবি করে। টাকা না দিলে কাজ বন্ধ করে চলে যাবে বলেও হুমকি দেয়।

রেশন চালুর সুপারিশ সংসদীয় কমিটির বীর মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য

কথা হলে স্বপ্নিল ইঞ্জিনিয়ার ট্রেডার্সের স্বত্বাধিকারী মোয়াজ্জেম হোসেন দফায় দফায় টাকা আদায়ের অভিযোগ অস্বীকার করেন। তিনি বলেন, বীরনিবাসে সমস্যা বা ত্রুটি থাকলে তা সারিয়ে দেওয়া হবে। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা টুকটুক তালুকদার জানান, বীরনিবাস নির্মাণে ত্রুটি থাকলে প্রয়োজনে সেই ঠিকাদারকে সরিয়ে দিতে হবে। নির্মাণাধীন বীরনিবাস দেখভাল ও তদারকির জন্য প্রকল্প বাস্তবায়ন অফিসকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

সূত্রঃ সমকাল 

নবীনতর পূর্বতন

যোগাযোগ ফর্ম