মুক্তিযোদ্ধা সংসদের ট্রাস্টি বোর্ডে তিন পদ দখল।। sainiktvnews

 মুক্তিযোদ্ধা সংসদের ট্রাস্টি বোর্ডে তিন পদ দখল

ময়মনসিংহ মুক্তিযোদ্ধা সংসদের ট্রাস্টি বোর্ডের একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা ব্যবস্থাপনা পরিচালক, সদস্য সচিব ও কোষাধ্যক্ষ এ তিনটি পদ দখল করে আছেন। সেই ট্রাস্টের প্রেসিডেন্ট মৃত্যুবরণ করায় একাই লাটাই ঘুরাচ্ছেন তিনি। এমন কি ট্রাস্টের জমি একটি ব্যাংকের কাছে বিক্রি করে এবং ব্যস্ততম এলাকায় নিজে ব্যবহার করে কোটি টাকা লোপাট করেছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। পরে সেই বীর মুক্তিযোদ্ধার নামে ময়মনসিংহ সিনিয়র জজ আদালতে মামলা (নং ১৬৭) হয়েছে।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে প্রকাশ, ময়মনসিংহ জেলার মুক্তিযোদ্ধাদের কল্যাণর্থে ১৯৮৮ সালে জমি অধিগ্রহণের লক্ষ্যে ট্রাস্টি বোর্ড গঠন করা হয়। তখন ওই ট্রাস্টি বোর্ডের ট্রাস্টের দলিল মূলে ব্রিগেডিয়ার আমিন আহমেদ চৌধুরী বীর বিক্রমকে ম্যানিজিং ডাইরেক্টর নিয়োগ দেয়া হয় এবং সুকৌশলে ব্যবস্থাপনা পরিচালক, সদস্য সচিব ও কোষাধ্যক্ষ তিনটি পদ দখল করে নেন বীর মুক্তিযোদ্ধা সাবেক কমান্ডার আনোয়ার হোসেন। ট্রাস্টি বোর্ডের অন্যান্য সদস্যরাও থাকে তার শিষ্য। ট্রাস্টি বোর্ডের প্রধান ব্রিগেডিয়ার আমিন আহমেদ চৌধুরী মারা যাওয়ায় এখন তিনি একাই সর্বেসর্বা।

জানা গেছে, ট্রাস্ট গঠনের পর বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদ ময়মনসিংহ জেলা ট্রাস্ট তার নিজ অর্থায়নে সরকারের সহযোগিতায় ময়মনসিংহ শহর মৌজার ১৪২০ অযুতাংশ ভূমি যার হোল্ডিং নং-১৪ জি.কে.এম.সি সাহা রোড। যা সরকার কর্তৃক পরিত্যক্ত ও বাণিজ্যিক সম্পত্তি হিসেবে গৃহীত হয়ে সরকার কর্তৃক বিক্রয়ের সিদ্ধান্ত হয়। যার মূল্যে এক লাখ ৮৮ হাজার একশ এক টাকা।

ময়মনসিংহ জেলা প্রশাসক থেকে টেন্ডারের মাধ্যমে ১৯৮৮ সালের ৬ ফেব্রুয়ারি ২১৬০ নং সাফ কাওলা দলিল মূলে খরিদ করে যথারীতি পূর্ণ দখল প্রাপ্ত জমি বুঝে পাওয়ার পর ১৪২০ শতাংশ জমি একটি ব্যাংকের কাছে বিক্রি করে দেয়া হয় । যার মূল্য দেখায় ৫ লাখ টাকা । অন্যান্য জমিতে লাখ টাকা জামানত নিয়ে দোকান বরাদ্দ দেয়া হয় । এসব পর্যালোচনা করে সাবেক কমান্ডার

আব্দর রব বাদী হয়ে ময়মনসিংহ সিনিয়র জজ আদালতে মামলা করে দেন (মামলা নং ১৬৭, তারিখ ২০১৬)।

মামলাটি চলমান থাকা অবস্থায় গত ২৫ এপ্রিল আনোয়ার হোসেন বেশ কজন বীর মুক্তিযোদ্ধাদের ভুল তথ্য দিয়ে সাবেক কমান্ডার আব্দুর রবের বিরুদ্ধে জেলা প্রশাসকের কাছে প্রধানমন্ত্রী বরাবর স্বারকলিপি প্রদান করেন। আগামীতে মুক্তিযোদ্ধা সংসদ নির্বাচনে আব্দুর রবের জনপ্রিয়তাই তার কাল হয়েছেন বলে অনেক বীর মুক্তিযোদ্ধা নাম প্রকাশ না করার শর্তে অধিকারকে জানিয়েছেন।

মুক্তিযোদ্ধা সংসদের ট্রাস্টি বোর্ডে তিন পদ দখল
ছবি ঃ সংগৃহীত 


এ বিষয়ে বিশিষ্ট আইনজীবী নজরুল ইসলাম চুন্নু বলেন, ট্রাস্টে বোর্ডের একই ব্যক্তি তিনটি পদ সংবিধান বর্হিভুত। এছাড়া ট্রাস্টের কল্যাণার্থে ব্যতিত ট্রাস্টের জমি বিক্রি করতে পারেন না। বীর মুক্তিযোদ্ধারা জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান সরকারের সুযোগ সুবিধাগুলো অনেক বীর মুক্তিযোদ্ধা অপপ্রয়োগ করছে, বিষয়টি দুঃখজনক।

এ বিষয়ে সাবেক কমান্ডার আব্দর রব জানান, আনোয়ার হোসেন ময়মনসিংহ বীর মুক্তিযোদ্ধাদের ভুল ব্যাখ্যা দিয়ে অনেক টাকা লোপাট করছেন। ট্রাস্ট গঠন করে একাই তিন পদ দখল নিন্দনীয়। এছাড়া রাজাকারকে মুক্তিযোদ্ধা বানিয়েছে, এর প্রমাণ কাছে আছে। বিএনপি সরকারের ঢাকায় মুক্তিযোদ্ধা সংসদে বঙ্গবন্ধুর ছবি ভাংচুরের সময় আহাদ চৌধুরীকে বের করে দিলেও তিনি বহাল তবিয়তে থাকেন।

তিনি আরও বলেন, ট্রাস্টের জমি উন্নয়ন করে বীর মুক্তিযোদ্ধার কল্যাণার্থে ব্যয় করার কথা, এতদিনে তিনি কেন তা করেননি। তা দুঃখজনক। এসব না করে তিনি গত প্রায় ৩২ বছরে নিজে ব্যবহার করে কোটি টাকার বেশি লোপাট করেছেন বলে মনে করেন তিনি।

এ বিষয়ে সাবেক কমান্ডার ট্রাস্টি বোর্ডের তিন পদ দখলকারী আনোয়ার হোসেনকে প্রশ্ন করলে তিনি বলেন, ট্রাস্টি বোর্ড গঠনের সময় সাবেক প্রেসিডেন্ট এরশাদ তাকে তিনটি পদে বহাল থাকার অনুমতি দিয়েছেন। জমি বিক্রি বিষয়ে সকলের মতামত নিয়ে বিক্রি করেছেন বলে জানান তিনি।

সুত্র ঃ অধিকার ২৯ এপ্রিল ২০২২।

নবীনতর পূর্বতন

যোগাযোগ ফর্ম