রাজাকারের রোষানলে মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের চলছে মধ্যযুগীয় কায়দায় নির্যাতন অত্যাচার।

  রাজাকারের নাম বাদ দিয়ে মুক্তিযোদ্ধার নামে সড়কের নামকরণ করায় মুক্তিযোদ্ধা ও তাঁর পরিবারের ওপর চলছে মধ্যযুগীয় কায়দায় নির্যাতন। চট্টগ্রামের ফটিকছড়ি উপজেলার খিরাম ইউনিয়নের বীর মুক্তিযোদ্ধা হাফেজুর রহমানের পরিবারের ওপর চলছে এমন নির্মম নির্যাতন। এ অবস্থায় রাজাকার আবুল খায়েরের পরিবারের নির্যাতনের হাত থেকে রক্ষা পেতে প্রধানমন্ত্রীর সহায়তা কামনা করেছেন মুক্তিযোদ্ধা হাফেজুর রহমান।


 মুক্তিযোদ্ধা হাফেজুর রহমান বলেন, ‘কয়েক মাস আগে রাজাকারের নাম বাদ দিয়ে আমার নামে সড়ক করার পর আমার ও পরিবারের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র শুরু করেছে রাজাকার আবুল খায়েরের পুত্র ও তার সহযোগীরা। তারা বেশ কয়েকবার হামলাও চালিয়েছে। এখন হুমকি দিচ্ছে খুন করে লাশ ঘরেই পচানোর। এখন আমার পরিবারের নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কিত।’ ফটিকছড়ির খিরাম ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সোহরাব হোসেন বলেন, মুক্তিযোদ্ধার সম্মানার্থে তিন ঘরিয়া পাড়ার সড়কটি হাফেজুর রহমানের নামে নামকরণ করা হয়। কয়েক বছর আগে তালিকাভুক্ত রাজাকার আবুল খায়েরের নামে নামকরণ করা হয়েছিল। নাম পরিবর্তনের পর থেকে পরিবারটি নানা ষড়যন্ত্র শুরু করেছে।’ ফটিকছড়ি থানার ওসি মাসুদ বিন আনোয়ার বলেন, ‘বিষয়টি আমাদের নজরেও আছে। ওই মুক্তিযোদ্ধা পরিবারকে নিরাপত্তার বিষয়ে সার্বিক সহযোগিতা দেওয়া হচ্ছে।’ জানা যায়, গত বছরের ২৬ মার্চ খিরাম ইউনিয়নের চেয়ারম্যান সোহরাব হোসেন খিরাম ইউনিয়নের ৬ মুক্তিযোদ্ধাকে সংবর্ধনা দেন। ওই অনুষ্ঠানে ওই এলাকার ছয়টি সড়ক ৬ মুক্তিযোদ্ধার নামে নামকরণের ঘোষণা দেওয়া হয়। ওই সিদ্ধান্তের ভিত্তিতে এ বছরের ২ জানুয়ারি একটি সড়ক বীর মুক্তিযোদ্ধা হাফেজুর রহমানে নামে নামকরণ করা হয়। তিন ঘরিয়া পাড়া সড়কটি মুক্তিযোদ্ধা হাফেজুর রহমানের নামে নামকরণের পর ওই এলাকার তালিকাভুক্ত রাজাকার আবুল খায়ের মেম্বারের ছেলে শহীদুল আলমসহ তাদের সহযোগীরা নানা ষড়যন্ত্র শুরু করে। এরই ধারাবাহিকতায় গত ২৪ ফেব্রুয়ারি মুক্তিযোদ্ধা হাফেজুর রহমানের চলাচলের জায়গায় ব্যারিকেড দেয়। পরে মুক্তিযোদ্ধার পরিবারের পক্ষ থেকে থানায় অভিযোগ করলে পুলিশ এসে সেই ব্যারিকেড অপসারণ করে। ৩ মার্চ ফের সশস্ত্র সন্ত্রাসী বাহিনী নিয়ে মুক্তিযোদ্ধা হাফেজুর রহমানের বাড়ির উত্তরের জমি দখলের চেষ্টা করে। এ সময় মুক্তিযোদ্ধার নবনির্মিত সীমানা প্রাচীর ভেঙে দেয়। তারা এলাকায় আতঙ্ক ছড়ানোর জন্য কয়েক রাউন্ড গুলি ছোড়ে।

পরিস্থিতি বেগতিক দেখে হাফেজুর রহমান থানায় ফোন করার পর পুলিশ এলে সন্ত্রাসীরা সটকে পড়ে। কিন্তু পুলিশ চলে যাওয়ার পর তারা আবারও হামলা চালায়। এরপর থেকে মুক্তিযোদ্ধা ও তাঁর পরিবারকে প্রাণনাশের হুমকি দিয়ে যাচ্ছে রাজাকার পরিবার। চালানো হচ্ছে হামলা।

মুক্তিযোদ্ধা হাফেজুর রহমানের ছেলে অধ্যাপক ফরিদ আহমদ বলেন, রাজাকারপুত্র শহিদুল আলম ও তার অনুসারীদের মূল লক্ষ্য হলো মুক্তিযোদ্ধা হাফেজুর রহমানের মালিকানাধীন জমি দখল করে রাস্তা নির্মাণ করে রাজাকার পিতার নামকরণ করে প্রতিশোধ নেওয়া।

নবীনতর পূর্বতন

যোগাযোগ ফর্ম