এবার বাজেট ২০২২-২৩ বড় প্রকল্পে বরাদ্দ কমেছে।sainiktvnews

 অর্থনীতি 

এবার বাজেট ২০২২-২৩ বড় প্রকল্পে বরাদ্দ কমেছে

এবার বাজেট ২০২২-২৩ বড় প্রকল্পে বরাদ্দ কমেছে।

সরকারের আটটি ফাস্ট ট্র্যাক প্রকল্পের ছয়টিতে আগামী অর্থবছরে বরাদ্দ কমেছে।আগামী ২০২২-২৩ অর্থবছরে দেশের বড় ও অগ্রাধিকার প্রকল্পগুলোতে বরাদ্দ কমানো হয়েছে। সরকারের অগ্রাধিকারপ্রাপ্ত আটটি প্রকল্পে সব মিলিয়ে আগামী অর্থবছরে প্রায় ৩৬ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ রাখা হয়েছে। চলতি অর্থবছরে ওই সব প্রকল্পে প্রায় ৪৮ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ রয়েছে। তবে পদ্মা সেতুর কাজ শেষ হওয়ায় অগ্রাধিকার প্রকল্পে সার্বিকভাবে বরাদ্দ কমেছে।


অর্থনীতিবিদেরা বর্তমান অর্থনৈতিক সংকট মোকাবিলায় ব্যয় সাশ্রয়ের পরামর্শ দিচ্ছেন। এ অবস্থায় সরকার ছয়টি বড় প্রকল্পে বরাদ্দ কিছুটা কমালেও দুটিতে বরাদ্দ বাড়িয়েছে।


বর্তমানে সরকারের আটটি অগ্রাধিকার প্রকল্প আছে। এগুলো ফাস্ট ট্র্যাক প্রকল্প হিসেবে পরিচিত। এর মধ্যে সাতটি প্রকল্প বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচিভুক্ত (এডিপি)। এডিপির বাইরে প্রকল্পটি হলো রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্র।


এডিপিভুক্ত সাতটি প্রকল্পের মধ্যে পাঁচটির বরাদ্দ কমেছে। এগুলো হলো রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র, মেট্রোরেল, পদ্মা সেতু নির্মাণ, পদ্মা সেতুর রেল সংযোগ ও পায়রা বন্দরের অবকাঠামো নির্মাণ প্রকল্প।

আরও পড়ুনঃআসছে বাজেট ২০২২-২০২৩।১০ টাকার চাল ১৫ টাকা হবে

 আর বরাদ্দ বেড়েছে মাতারবাড়ী তাপবিদ্যুৎকেন্দ্র ও দোহাজারী থেকে কক্সবাজার পর্যন্ত রেলপথ নির্মাণ প্রকল্প। রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্রেও বরাদ্দ বেড়েছে।এ বিষয়ে জানতে চাইলে বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশেষ ফেলো মোস্তাফিজুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, বড় প্রকল্পে বরাদ্দ কমানোর উদ্যোগটি ভালো। এই মুহূর্তে বৈদেশিক মুদ্রার চাপ সামলানোর বিষয়টিকে অগ্রাধিকার দেওয়া উচিত। তিনি আরও বলেন, যেসব প্রকল্পে বিদেশি উপাদান বা আমদানিনির্ভরতা আছে, সেসব প্রকল্পের একটু শ্লথগতি করা ভালো। এতে ডলারের ওপর চাপ কমবে। তবে আগামী বছর সমাপ্ত হবে এমন প্রকল্পে বরাদ্দ কমানো ঠিক নয়। প্রকল্প বাস্তবায়ন পিছিয়ে গেলে খরচ বাড়বে।

আরও পড়ুনঃজার্মানি পড়েছে এবার বিপদে, খরচ বাড়বে ৫.৪ বিলিয়ন ডলার।

চলতি অর্থবছরের সংশোধিত এডিপিতে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের জন্য বরাদ্দ রয়েছে ১৪ হাজার ৮৩৬ কোটি টাকা। আগামী অর্থবছরে ১ হাজার ৪৪১ কোটি টাকা কমিয়ে বরাদ্দ রাখা হয়েছে ১৩ হাজার ৩৯৫ কোটি টাকা। ২০১৬ সালে ১ লাখ ১৩ হাজার ৯৩ কোটি টাকার এ প্রকল্পটি নেওয়া হয়। ২০২৫ সালের জুন মাসে প্রকল্পটি শেষ হওয়ার কথা আছে। এই পর্যন্ত প্রকল্প বাস্তবায়ন ৫০ শতাংশের মতো।চলতি অর্থবছরে উত্তরা থেকে মতিঝিল পর্যন্ত মেট্রোরেল নির্মাণ প্রকল্পে বরাদ্দ আছে ৪ হাজার ২৩৩ হাজার কোটি টাকা। আগামী অর্থবছরে এ প্রকল্পের জন্য বরাদ্দ রাখা হয়েছে ২ হাজার ৮৮২ কোটি টাকা। এ ক্ষেত্রে বরাদ্দ কমেছে ১ হাজার ৩৫১ কোটি টাকা। আগামী ডিসেম্বর মাসে উত্তরা থেকে আগারগাঁও পর্যন্ত মেট্রোরেল চালুর কথা আছে। ২০১২ সালে প্রায় ২২ হাজার কোটি টাকার এই প্রকল্প নেওয়া হয়।পদ্মা সেতুর নির্মাণকাজ প্রায় শেষ। চলতি জুন মাসেই যান চলাচলের জন্য খুলে দেওয়া হবে এ সেতু। কিন্তু সেতুতে রেলপথ স্থাপন এবং আনুষঙ্গিক ব্যয়ের জন্য আগামী অর্থবছরে ২ হাজার ২০২ কোটি টাকা বরাদ্দ রাখা হয়েছে। এ ছাড়া পদ্মা সেতুর দুই পাড়ের অঞ্চলের মধ্যে রেল সংযোগ প্রকল্পের জন্য আগামী অর্থবছরে বরাদ্দ ৫ হাজার ৮০৯ কোটি টাকা। চলতি অর্থবছরে এই প্রকল্পে বরাদ্দ আছে ৬ হাজার ১৩৭ কোটি টাকা। ৩৯ হাজার কোটি টাকার এই প্রকল্পে প্রায় ৬০ শতাংশের মতো টাকা খরচ হয়েছে।


পায়রা বন্দর অবকাঠামো নির্মাণ প্রকল্পেও বরাদ্দ কমেছে ২৫০ কোটি টাকা। এ প্রকল্পে আগামী অর্থবছরে বরাদ্দ ২৮৬ কোটি টাকা।চট্টগ্রামের দোহাজারী থেকে কক্সবাজার পর্যন্ত ১৮ হাজার কোটি টাকা খরচে রেলপথ নির্মাণ করা হচ্ছে। চলতি অর্থবছরের সংশোধিত এডিপিতে এই প্রকল্পে বরাদ্দ আছে ৯৩৩ কোটি টাকা। 

আরও পড়ুনঃজামুকা বিলুপ্তির দাবি একাত্তরের মুক্তিযোদ্ধা সংসদ

আগামী বছর ১ হাজার ৪৫০ কোটি টাকা খরচ করা হবে। রেলপথ নির্মাণের মতো প্রকল্পে অর্থনীতির এই সংকটে এত বরাদ্দ দেওয়া যৌক্তিক কি না, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। অন্যদিকে মাতারবাড়ী তাপবিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণে ৫০০ কোটি টাকা বরাদ্দ বেড়েছে। আগামী অর্থবছরে ৬ হাজার ৮১৫ কোটি টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।এ দিকে রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ প্রকল্প এডিপি বইয়ে অন্তর্ভুক্ত নয়। এটি আলাদাভাবে বাংলাদেশ ও ভারতের বিনিয়োগে নির্মাণ করা হচ্ছে। আগামী ডিসেম্বর মাসে ১৬ হাজার কোটি টাকার এ প্রকল্প শেষ হওয়ার কথা রয়েছে।


এ বিষয়ে বড় অবকাঠামো বিশেষজ্ঞ মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান প্রথমআলোকে বলেন, বর্তমান প্রেক্ষাপটে যেহেতু সম্পদের সীমাবদ্ধতা আছে, তাই প্রকল্পের বরাদ্দ কমানোর প্রয়োজনীয়তা রয়েছে।

সূত্রঃপ্রথম আলো ৮জুন 

নবীনতর পূর্বতন

যোগাযোগ ফর্ম