বেঁধে দেয়া সময়ে নির্মাণ হয়নি বীর নিবাস। ঘরের ছাদ ঢালাই দিয়ে লাপাত্তা ঠিকাদার। বিপাকে শরীয়তপুর সদরের উপকারভোগীরা। দ্রুত কাজ শেষ করার আশ্বাস কর্তৃপক্ষের।সরেজমিনে দেখা গেছে, কোনোটায় কেবল চারপাশের ইট সিমেন্টের দেয়াল আবার কোনোটায় শুধু ছাদ। এমন চিত্র শরীয়তপুর সদর উপজেলার অন্তত ২৫টি বীর নিবাসে।সরকারের বিশেষ সম্মাননা হিসেবে অসচ্ছল মুক্তিযোদ্ধাদের পাকা ঘর দেয়ার প্রকল্পের আওতায় শরীয়তপুরে ২০২১-২২ অর্থ বছরে নিয়োগ দেয়া হয় কয়েকজন ঠিকাদারকে। ২০২২ সালের জুন মাসে ভবন হস্তান্তর করার চুক্তি থাকলেও দেয়াল তুলে ছাদ ঢালাই দেয়ার পর দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির অজুহাতে ঠিকাদাররা বন্ধ করে দেন কাজ। আর সেভাবেই পড়ে আছে ভবনগুলো। ফলে চরম বিপাকে পড়েছেন উপকারভোগীরা।বেশিরভাগ পরিবার তাদের পুরনো ঘর বিক্রি করে দিয়ে থাকার স্থান হয়েছে ছোট্ট কুঠিরে, কেউ আবার থাকছেন ভাড়া করা ঘরে।
মুক্তিযোদ্ধার স্ত্রী-সন্তানরা জানায়, পাকা ভবন পেয়ে আমরা খুশি হয়েছিলাম, কিন্তু এটি নির্মাণ করতে দীর্ঘ সময় লাগার কারণে এখন চরম সমস্যায় আছি।
আরও পড়ুন ঃ বীর মুক্তিযোদ্ধা ব্যাংক ঋন
মুক্তিযোদ্ধা সন্তান মুজিবর সরদার বলেন, ‘আমরা তিন হাজার টাকা ভাড়া দিয়ে ঘর নিয়েছি। সেখানে প্রায় দেড় বছরের বেশি সময় ধরে থাকছি। কবে নাগাদ কাজ শেষ হবে জানি না। আমরা ঠিকাদারের সঙ্গে ফোনে কয়েক মাস আগে কথা বলেছিলাম, তারা বলেছিল দ্রুত সময়ের মধ্যে কাজ শেষ করে দিবে। তাও ছয় মাসের অধিক সময় পেরিয়ে গেল, এখন ঠিকাদারের কোনো খবর নেই, ফোন দিলে ধরছে না।’সদর উপজেলার দাসত্তা, স্বর্ণ ঘোষ, নীলকান্দি, আটিপাড়া, দক্ষিণ আটং, কোয়ারপুর, আমতলী, বরাইল, সিঙ্গাড়িয়া, ভাসান চর, সুবেদারকান্দি, এলাকার অন্তত ২৫ মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য নির্মিত বীর নিবাসের চিত্র একই।
তবে ঠিকাদার রাশেদুজ্জামান বলেন, ‘এমনিতেই দ্রব্যমূল্যের দাম বেশি। তাছাড়া আমাদের ফান্ড না থাকায় আমরা কাজ করতে পারিনি। আগামী দুই-তিন মাসের মধ্যেই কাজ শেষ করে দিব।’
এ বিষয়ে সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জ্যোতি বিকাশ চন্দ্র বলেন, ‘আমরা ঠিকাদারদের সঙ্গে কথা বলেছি। দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির কারণে ঠিকাদাররা কাজ শেষ না করেই বন্ধ করে দিয়েছিল। আমরা দ্রুত সময়ের মধ্যে ফান্ড ব্যবস্থা করছি। আগামী কয়েক মাসের মধ্যেই কাজ শেষ হবে।’শৌচাগার ও বারান্দাসহ ৩ কক্ষের প্রতিটি ঘর নির্মাণ করতে খরচ হচ্ছে ১৪ লাখ ১০ হাজার টাকা।