সর্বশেষ ৩০ এপ্রিল পত্রিকা প্রকাশিত মুক্তিযোদ্ধা সংবাদ muktijuddha news 30 april 2025 sainiktvnews

 

মুক্তিযোদ্ধা’র সনদ বাতিলের তালিকায় আলোচিত নামগুলো কারা 
রয়েছে হাসিনা সরকারের আমলে ।

ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত হয় শেখ হাসিনার সরকার। ওই সরকারের মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী ছিলেন আ ক ম মোজাম্মেল হক। মুক্তিযোদ্ধার তালিকা বৃদ্ধি, যুদ্ধাপরাধীদের তালিকা প্রকাশ না করাসহ বিভিন্ন বিষয়ে বিতর্কিত ছিলেন তিনি। তবে এবার জানা গেল সাবেক মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রীই ছিলেন ‘ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা’।মোজাম্মেল হকসহ বিগত সরকারের সাত মন্ত্রীর বিরুদ্ধে ‘ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা’র অভিযোগ তদন্ত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। এই তালিকায় আওয়ামী লীগের দুই সংসদ সদস্য, একজন বিচারপতি, সাবেক সচিব, আইজিপি, সেনা কর্মকর্তাসহ আরো ১৫ জন বিশিষ্ট ব্যক্তির মুক্তিযোদ্ধার তথ্য-উপাত্ত যাচাই-বাছাই শুরু করেছে তথ্য যাচাই-বাছাইকারী প্রতিষ্ঠান জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিল (জামুকা)। অভিযোগ প্রমাণিত হলে এসব প্রভাবশালী ব্যক্তির মুক্তিযোদ্ধার সনদ ও গেজেট বাতিল হবে।

গত ১৩ এপ্রিল জামুকার চেয়ারম্যান ও মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক উপদেষ্টা ফারুক-ই-আজমের সভাপতিত্বে জামুকার ৯৫তম সভা হয়।

মুক্তিযোদ্ধা’র সনদ বাতিলের তালিকায় আলোচিত নামগুলো কারা  রয়েছে হাসিনা সরকারের আমলে ।

ওই সভা সূত্রে জানা গেছে, সাবেক মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হকসহ দেশের বিশিষ্ট ২২ ব্যক্তির মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ নিয়ে বিতর্ক রয়েছে। এই ২২ জনের এসংক্রান্ত তথ্য যাচাই-বাছাই করতে তাদের তথ্য-প্রমাণাদি যেমন—আবেদন, তদন্ত প্রতিবেদন, সভার কার্যবিবরণী, গেজেট ও অন্যান্য প্রামাণিক তথ্য সংগ্রহ করে তদন্ত করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক সচিব ইসরাত চৌধুরী কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা শনাক্ত করার ঘোষণা দিয়েছে সরকার। এ জন্য ভুয়া মুক্তিযোদ্ধার তথ্য দিতে মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইটে নির্দিষ্ট ফরম প্রকাশ করা হয়েছে।

এর বাইরেও গণমাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদ এবং সরাসরি আবেদনেও অনেকে অভিযোগ দিচ্ছেন। জামুকার গত সভায় এসব আবেদন আমলে নিয়ে কয়েকজন সাবেক মন্ত্রীসহ দেশের বিশিষ্ট ২২ জন ব্যক্তির মুক্তিযোদ্ধার সনদ ও গেজেটসংক্রান্ত নথি যাচাই করার সিদ্ধান্ত হয়েছে।’

যাদের মুক্তিযোদ্ধার সনদ ও গেজেটসংক্রান্ত নথিপত্র তদন্ত করা হবে, তারা হলেন শেখ হাসিনার সরকারের তিন মেয়াদের মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক, সাবেক নৌপরিবহনমন্ত্রী শাজাহান খান, সাবেক মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম, সাবেক আইনমন্ত্রী অ্যাডভোকেট আব্দুল মতিন খসরু, সাবেক বাণিজ্যমন্ত্রী কর্নেল (অব.) ফারুক খান ও টিপু মুনশি এবং সাবেক সমাজকল্যাণ প্রতিমন্ত্রী ডা. মোজাম্মেল হোসেন।

জানা গেছে, সাবেক মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক কোথায় প্রশিক্ষণ নিয়েছেন এবং কোথায় যুদ্ধ করেছেন, তা নিয়ে ধোঁয়াশা রয়েছে। এ নিয়ে তিনি নিজেও মুখ খোলেননি।বিতর্কটি শুরু হয় ১৯৯৬ সালে। তখন আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর মুক্তিযোদ্ধা গেজেট প্রকাশ করে। সেখানে আ ক ম মোজাম্মেল হকের নাম অন্তর্ভুক্ত করা হয়। এ নিয়ে আলোচনা-সমালোচনা হয় খোদ জাতীয় সংসদেও। ২০২৩ সালে উচ্চ আদালতে রিট পিটিশন করেন জামুকার সদস্য ও জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা ফাউন্ডেশনের মহাসচিব খ ম আমীর আলী। মামলা নম্বর ১৫১৪২। রিট মামলায় তৎকালীন মন্ত্রিপরিষদসচিব, মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব, জামুকার চেয়ারম্যানসহ (সাবেক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক) মোট সাতজনকে আসামি করা হয়।

আদালতে মামলার আবেদনপত্র বিশ্লেষণ এবং বিভিন্ন সূত্রে পাওয়া তথ্য অনুসন্ধান করে জানা যায়, ভারতে প্রশিক্ষণ নেওয়া ৫১ হাজার মুক্তিযোদ্ধার তালিকায় নাম নেই আ ক ম মোজাম্মেল হকের। জাতীয় জাদুঘরে রাখা ১৯৮৬ সালে তৈরি লাল মুক্তিবার্তার ভলিউম ঘষামাজা করে তাঁর নাম অন্তর্ভুক্ত করার অভিযোগ রয়েছে।

এ তালিকায় আরো রয়েছেন আওয়ামী লীগের দুই সংসদ সদস্য আমিরুল আলম মিলন ও মীর শওকত আলী বাদশা, সাবেক সচিব খোন্দকার শওকত হোসেন, অতিরিক্ত সচিব তড়িৎ কান্তি রায় ও গোপালগঞ্জের তরুণ কান্তি বালা, সাবেক বিচারপতি শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক, সাবেক আইজিপি আবদুর রহিম খান, সাবেক সেনা কর্মকর্তা লে. জেনারেল মোল্লা ফজলে আকবর, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল জাহাঙ্গীর কবির, ক্যাপ্টেন আনারুল ইসলাম (মিরপুর ক্যাম্প), সাবেক কর কমিশনার ও বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইটের পরিচালক ড. এস এম জাহাঙ্গীর আলম, স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের শাহ সালাউদ্দিন, ফেনীর শফিকুল বাহার মজুমদার ও সালেহ উদ্দিন চৌধুরী এবং রংপুর আলমনগরের আবদুস সোবহান খান।তথ্য সুত্র কালের কণ্ঠ

চাঁপাইনবাবগঞ্জে আইনশৃঙ্খলা সংক্রান্ত পুলিশের সুধী সমাবেশে জামায়াতে ইসলামীর একজন নেতা একজন বীর মুক্তিযোদ্ধার বক্তব্যে বাধা দিয়ে থামিয়ে দিয়েছেন- এমন অভিযোগ পাওয়া গেছে

চাঁপাইনবাবগঞ্জে আইনশৃঙ্খলা সংক্রান্ত পুলিশের সুধী সমাবেশে জামায়াতে ইসলামীর একজন নেতা একজন বীর মুক্তিযোদ্ধার বক্তব্যে বাধা দিয়ে থামিয়ে দিয়েছেন- এমন অভিযোগ পাওয়া গেছে


চাপাইনবাবগঞ্জে আইনশৃঙ্খলা সংক্রান্ত পুলিশের সুধী সমাবেশে জামায়াতে ইসলামীর একজন নেতা একজন বীর মুক্তিযোদ্ধার বক্তব্যে বাধা দিয়ে থামিয়ে দিয়েছেন- এমন অভিযোগ পাওয়া গেছে।

শনিবার বিকালে শহরের নিউমার্কেট এলাকার শহীদ সাটু কমপ্লেক্স অডিটরিয়ামে এ ঘটনা ঘটে বলে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন।

এ ঘটনার পর বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. তরিকুল আলম বক্তব্য শেষ না করেই আক্ষেপ নিয়ে অডিটরিয়াম থেকে বের হয়ে যান। তিনি বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদ চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা ইউনিটের সাবেক সহকারী কমান্ডার।তাকে বক্তব্যে বাধা দিয়েছেন জেলা জামায়াতের নায়েবে আমির লতিফুর রহমান। তিনি চাঁপাইনবাবগঞ্জ-৩ (চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর উপজেলা) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য।

এ ঘটনার সময় জেলা পুলিশ সুপার রেজাউল করিমের সভাপতিত্বে মঞ্চে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন রাজশাহী রেঞ্জের উপ-মহাপরিদর্শক (ডিআইজি) মোহাম্মদ শাহজাহান।

এছাড়া সেখানে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, ব্যবসায়ী সংগঠন, পরিবহন মালিক সমিতি, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতা, সাংবাদিক, পুলিশের বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তাসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার অন্তত আড়াইশ মানুষ উপস্থিত ছিলেন।

প্রত্যক্ষদর্শীরা বলেন, বিকাল সাড়ে ৪টার দিকে সুধী সমাবেশ শুরু হয়। একে একে একজন বিএনপি নেতা, একজন পরিবহন মালিক সমিতির নেতা, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের তিনজন নেতা বক্তব্য দেন। বিকাল সাড়ে ৫টার দিকে বক্তব্য দিতে আসেন মুক্তিযোদ্ধা তরিকুল আলম।

বক্তব্যের এক পর্যায়ে তিনি বলেন, “১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধকে ছোট করে ৫ অগাস্টের সফলতা কামনা করা আমাদের ভুল হবে।”

এ কথা বলার পর পরই সামনের সারিতে বসে থাকা জামায়াত নেতা লতিফুর রহমান ক্ষুব্ধ হয়ে প্রতিবাদ জানান। তিনি হইচই শুরু করলে মুক্তিযোদ্ধা তরিকুল থেমে যান। তারপর আবার কিছু বলার চেষ্টা করেন। কিন্তু হইচইয়ের কারণে বলতে পারেনি।

এ ঘটনার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়েছে। সেখানে দেখা যাচ্ছে, জামায়াত নেতা লতিফুর রহমান আঙ্গুল উঁচিয়ে বীর মুক্তিযোদ্ধা তরিকুলের দিকে কথা বলছেন এবং একপর্যায়ে নিজের অবস্থান ছেড়ে কিছুটা সামনে তেড়ে আসেন। তখন সেখানে থাকা একজন পুলিশ কর্মকর্তা ও অন্যরা তাকে নিবৃত্ত করেন।

এসময় জামায়াতের নেতা লতিফুরকে বলতে শোনা যায়, “এত বড় বিপ্লবকে কেন ছোট করবেন?”

প্রতি উত্তরে বীর মুক্তিযোদ্ধা কিছু বলতে গিয়েও বলতে পারেননি। তখন জামায়াতের ওই নেতা চিৎকার দিয়ে বলেন, “৫ অগাস্টকে বাদ দিয়ে কিছু হবে না।তথ্য সুত্র বিডি ২৪ কম 

শহীদ বীর মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য সারা দেশে সমাধি নির্মাণের প্রকল্প থেকে সরে এসেছে অন্তর্বর্তী সরকার

শহীদ বীর মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য সারা দেশে সমাধি নির্মাণের প্রকল্প থেকে সরে এসেছে অন্তর্বর্তী সরকার


শহীদ বীর মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য সারা দেশে সমাধি নির্মাণের প্রকল্প থেকে সরে এসেছে অন্তর্বর্তী সরকার। মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয় বলছে, সমাধি নির্মাণের জন্য জায়গা পাওয়া যাচ্ছে না। কোথাও কোথাও সমাধি চিহ্নিত করা যাচ্ছে না। এসব কারণে ২০ হাজারের মধ্যে ১৫ হাজার ৬০৪টি সমাধি আর নির্মাণ করা হবে না। তবে ‘যুদ্ধসমাধি’ ধরনের কিছু করার কথা ভাবা হচ্ছে।

সারা দেশে শহীদ বীর মুক্তিযোদ্ধাদের মোট ২০ হাজার সমাধি নির্মাণের সিদ্ধান্ত হয় তৎকালীন আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে, ২০১৮ সালে। ‘শহীদ মুক্তিযোদ্ধা ও অন্যান্য বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সমাধিস্থল সংরক্ষণ ও উন্নয়ন’ শিরোনামের প্রকল্পটিতে ব্যয় ধরা হয় ৪৬১ কোটি টাকা। পরে ব্যয় কমিয়ে করা হয় ৩৯৬ কোটি টাকা। প্রকল্পের আওতায় ৫ হাজার সমাধি করার সিদ্ধান্ত হয় গণপূর্ত অধিদপ্তরের দেওয়া তালিকা ধরে। আর ১৫ হাজার সমাধি করার কথা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদের (ইউএনও) দেওয়া তালিকা অনুযায়ী।সরকারের উন্নয়ন প্রকল্প নজরদারি করা সংস্থা বাস্তবায়ন পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন বিভাগের (আইএমইডি) প্রতিবেদন বলছে, প্রকল্পটি অনুমোদনের পর থেকে এ পর্যন্ত গণপূর্ত অধিদপ্তরের তালিকা দেওয়া ৫ হাজার সমাধির মধ্যে ৪ হাজার ১২৬টির কাজ শেষ হয়েছে। ২৭০টির কাজ চলমান। ইউএনওদের মাধ্যমে কোনো সমাধি নির্মিত হয়নি। আইএমইডির তথ্যমতে, গত ডিসেম্বর মাস পর্যন্ত প্রকল্পের অগ্রগতি মাত্র ১৮ শতাংশ। অর্থাৎ প্রায় ৮০ কোটি টাকার কাজ হয়েছে।

মূলত জমির জটিলতায় শহীদ মুক্তিযোদ্ধাদের সমাধি করা যাচ্ছে না বলে জানান প্রকল্প পরিচালক পলি কর। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, এ ব্যাপারে ভিন্ন প্রকল্প নেওয়ার চিন্তাভাবনা করা হচ্ছে।

মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তানি বাহিনী ও তাদের স্থানীয় দোসরদের হাতে দেশের বিভিন্ন স্থানে বীর মুক্তিযোদ্ধারা শহীদ হন। মূলত সেসব স্থানে সমাধি নির্মাণের পরিকল্পনা থেকে প্রকল্পটি হাতে নেওয়া হয়েছিল। সমাধি নির্মাণ করতে গিয়ে মোটা দাগে চারটি সমস্যার কথা বলেছে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়। এক. সমাধির জায়গা চিহ্নিত করা যাচ্ছে না; দুই. অন্যত্র সমাধি করতে গেলে জমি পাওয়া যাচ্ছে না; তিন. সমাধির নকশায় ত্রুটি এবং চার. সমাধির জন্য প্রতিবছর যে টাকা বরাদ্দ দেওয়া দরকার, তা দেওয়া হয়নি। এসব কারণে অনুমোদনের পর ছয় বছর পেরিয়ে গেলেও প্রকল্পের অগ্রগতি হয়েছে এক-চতুর্থাংশের কম।

সমাধি নির্মাণের জন্য উপজেলাগুলোতে ইউএনওকে সভাপতি করে তিন সদস্যের কমিটি করা হয়েছিল। কমিটির বাকি দুজন সদস্য ইউএনও মনোনীত একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা ও উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পিআইও)। তবে বিভিন্ন উপজেলা থেকে জানানো হয়, বেশির ভাগ শহীদ বীর মুক্তিযোদ্ধাকে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়েছে। সেখানে সমাধি করা কঠিন। নির্ধারিত জায়গার বাইরে সমাধি করতে গেলে জমি অধিগ্রহণ করতে হবে। অনেকেই জমি দিতে আগ্রহী নন। আবার কোথাও কোথাও সরকার অনুমোদিত জায়গার মধ্যে শহীদ বীর মুক্তিযোদ্ধার সমাধি নেই।

এ বিষয়ে গত ২৯ মার্চ রংপুর, জামালপুর ও নোয়াখালীর তিন উপজেলার ইউএনওদের সঙ্গে কথা বলেন এই প্রতিবেদক। ৫ আগস্টের পটপরিবর্তনের পর তাঁরা নতুন কর্মস্থলে এসেছেন। তাঁরা বলেন, শহীদ বীর মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য সমাধির কোনো তথ্য জানা নেই। সমাধির তালিকা সম্পর্কেও কিছু জানেন না তাঁরা।

সমাধির নকশা নিয়ে জটিলতার কারণেও প্রকল্পের অগ্রগতি সন্তোষজনক ছিল না বলে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানিয়েছেন। তাঁরা জানান, মুসলিম ধর্মাবলম্বীদের জন্য মূল নকশায় সমাধির দৈর্ঘ্য ৭ ফুট ৮ ইঞ্চি, প্রস্থ ৫ ফুট এবং উচ্চতা ৩ ফুট ৪ ইঞ্চি নির্ধারণ করা হয়। আর হিন্দু, বৌদ্ধ ও খ্রিষ্টধর্মাবলম্বীদের জন্য দৈর্ঘ্য ৫ ফুট, প্রস্থ ৩ ফুট ৬ ইঞ্চি, উচ্চতা ৩ ফুট নির্ধারণ করা হয়। কিন্তু ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান এ নকশা ধরে কাজ করতে গিয়ে সমস্যায় পড়ে। পরে নকশায় পরিবর্তন আনা হয়।

মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা বলছেন, শহীদ বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সমাধি নির্মাণ প্রকল্পটি বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ে যতটা গুরুত্ব দেওয়া উচিত ছিল, ততটা দেওয়া হয়নি। দায়সারাভাবে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করা হচ্ছিল। প্রকল্প পরিচালক (পিডি) বদল হয়েছে অন্তত পাঁচবার। চাহিদা অনুযায়ী বাজেটও দেওয়া হতো না। সব দিক বিবেচনা করে প্রকল্পটি সমাপ্তির সিদ্ধান্ত হয়েছে।

পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের অধীন সংস্থা আইএমইডির পরিচালক (উপসচিব) নিশাত জাহান গত ১৪ জানুয়ারি চট্টগ্রামের পটিয়া উপজেলার তিনটি সমাধি পরিদর্শনে যান। শহীদ বীর মুক্তিযোদ্ধা নুরুল ইসলাম চৌধুরী, শহীদ বীর মুক্তিযোদ্ধা আবুল বশর ও শহীদ বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. রুস্তম আলী চৌধুরীর সমাধি পরিদর্শন শেষে একটি প্রতিবেদন তৈরি করেন তিনি। তাতে তিনি উল্লেখ করেন, এ প্রকল্পের আওতায় উপজেলা প্রশাসনের মাধ্যমে কোনো সমাধি নির্মাণ করা হয়নি। বর্তমানে গণপূর্ত অধিদপ্তরের ২৭০টি সমাধির নির্মাণকাজ চলছে। ৪ হাজার ১২৬টির কাজ শেষ হয়েছে। গত বছরের জুন মাসে প্রকল্পের কাজ শেষ হওয়ার কথা ছিল। তবে বাকি কাজ শেষ করতে আরও এক বছর, অর্থাৎ ২০২৫ সালের জুন পর্যন্ত সময় বাড়ানো হয়েছে।


গণ-অভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর গত ৮ আগস্ট দায়িত্ব নেয় অন্তর্বর্তী সরকার। ২৪ আগস্ট মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ে অনুষ্ঠিত বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির (এডিপি) প্রকল্প পর্যালোচনা সভায় মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক উপদেষ্টা ফারুক-ই-আজম প্রকল্পটি স্থগিত রাখার নির্দেশ দেন। পরে অক্টোবর মাসে এডিপি সভায় প্রকল্পের আওতায় নতুন কোনো কার্যক্রম গ্রহণ না করার নির্দেশ দেন উপদেষ্টা। শুধু গণপূর্ত অধিদপ্তরের মাধ্যমে নির্মাণাধীন সমাধিগুলোর বাকি কাজ শেষ করার সিদ্ধান্ত হয় সভায়।

উপদেষ্টা ফারুক-ই-আজম গত ২৩ মার্চ তাঁর দপ্তরে প্রথম আলোকে বলেন, সমাধি নির্মাণের জন্য জমি পাওয়া যাচ্ছে না। এ কারণে সমাধি নির্মাণের সিদ্ধান্ত থেকে সরে এসেছেন তাঁরা। তিনি বলেন, ‘আমি দুটি সমাধি পরিদর্শনে গিয়েছি। তাতে দেখা গেছে, সমাধি দুটি ছোট ছোট। সমাধির জন্য জমি পাওয়া যাচ্ছে না। এখন সমাধির পরিবর্তে ওয়ার সিমেট্রির (যুদ্ধসমাধি) মতো করা হবে।’তথ্য সুত্র প্রথম আলো 


নবীনতর পূর্বতন

যোগাযোগ ফর্ম