ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের (ডাকসু) ভিপি সাদিক কায়েম হুঁশিয়ারি দিয়েছেন, নতুন বাংলাদেশে কোনোভাবেই মুক্তিযুদ্ধের ব্যবসা চলবে না। তার মতে, ফ্যাসিবাদী আমলে একটি দল মুক্তিযুদ্ধ ইন্ডাস্ট্রির নামে ব্যবসা করত এবং তা রাজনৈতিক ফ্রেমিংয়ের অংশ ছিল। তিনি বলেন, শাহবাগ আন্দোলনের মাধ্যমে তারা ফ্যাসিবাদ কায়েম করেছিল, কিন্তু নতুন বাংলাদেশে এ ধরনের ব্যবসার কোনো স্থান নেই। সাদিক কায়েম আরও বলেন, জুলাই চেতনা ধারণ করে যারা নতুন বাংলাদেশ বিনির্মাণে কাজ করতে চাইবে, শুধুমাত্র সেই রাজনীতি কার্যকর হবে। শহীদদের আত্মত্যাগ এবং গাজীদের সেক্রিফাইসের মাধ্যমে প্রাপ্ত নতুন বাংলাদেশের লক্ষ্য হলো বৈষম্যহীন, ইনসাফভিত্তিক রাষ্ট্র গঠন। শুক্রবার ৭ নভেম্বর বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী সম্মেলন কেন্দ্রে ইসলামী ছাত্রশিবির আয়োজিত ডাকসু সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে তিনি এই স্পষ্ট বার্তা দেন, যা দেশের তরুণ প্রজন্মের মধ্যে নৈতিক ও রাজনৈতিক সচেতনতা বৃদ্ধির আহ্বান জানায়।
নতুন বাংলাদেশের পথে মুক্তিযুদ্ধ ইন্ডাস্ট্রি বন্ধের হুঁশিয়ারি
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের (ডাকসু) নবনির্বাচিত ভিপি সাদিক কায়েম নতুন বাংলাদেশের রাজনৈতিক ও সামাজিক মানচিত্রে স্পষ্ট বার্তা দিয়েছেন। তিনি হুঁশিয়ারি দিয়েছেন যে, দেশের স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধের নামে কোনো ব্যবসা, রাজনৈতিক ফ্রেমিং বা ব্যক্তিগত স্বার্থ হাসিল করার সুযোগ থাকবে না।
সাদিক কায়েমের বক্তব্যের প্রেক্ষাপট হলো, অতীতের ফ্যাসিবাদী আমলে কিছু রাজনৈতিক দল মুক্তিযুদ্ধ ইন্ডাস্ট্রির নামে নানা ধরনের ব্যবসা করত। শহীদদের আত্মত্যাগ এবং মুক্তিযুদ্ধের মর্যাদা ব্যবহার করে তারা নিজের স্বার্থ হাসিল করত। এসবের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলে নতুন বাংলাদেশের রাজনীতিতে স্বচ্ছতা ও নৈতিক মান বজায় রাখা এখন একান্ত জরুরি।
ফ্যাসিবাদ ও মুক্তিযুদ্ধ ইন্ডাস্ট্রি: অতীতের শিক্ষা
ডাকসু ভিপি উল্লেখ করেন, "ফ্যাসিবাদী আমলে একটি দল সবসময় মুক্তিযুদ্ধ ইন্ডাস্ট্রি নিয়ে ফ্রেমিং করতো এবং ব্যবসা করতো। শাহবাগ প্রতিষ্ঠা করার মাধ্যমে তারা দেশে ফ্যাসিবাদ কায়েম করেছিল।"
তার বক্তব্যে বোঝা যায়, রাজনৈতিক দখলদারিত্ব ও মিথ্যা জাতীয় আবেগের ভিত্তিতে স্বার্থপর কার্যক্রমের বিরুদ্ধে সচেতন হতে হবে। তিনি নতুন প্রজন্মের ছাত্র নেতাদের প্রতি আহ্বান জানান, শুধুমাত্র জাতির কল্যাণ ও ন্যায়বিচারের রাজনীতি চালাতে হবে।
জুলাই চেতনা ও নতুন বাংলাদেশের ধারণা
ডাকসু ভিপি সাদিক কায়েম বলেন, "জুলাই চেতনা ধারণ করে যারা নতুন বাংলাদেশ বিনির্মাণ করতে চাইবে, শুধুমাত্র সেই রাজনীতি চলবে।"
জুলাই চেতনার মূল অর্থ হলো দেশের স্বাধীনতা ও গণতন্ত্রের মূল্যবোধ ধরে রেখে সকল কার্যক্রম পরিচালনা করা। তিনি ছাত্রসমাজকে সতর্ক করেছেন যে, মুক্তিযুদ্ধ ও শহীদদের আত্মত্যাগকে বাণিজ্যের জন্য ব্যবহার করা যাবে না।
সাদিক কায়েমের বার্তা অনুযায়ী, নতুন বাংলাদেশ হবে বৈষম্যহীন ও ইনসাফভিত্তিক। শহীদদের আত্মত্যাগের মান্যতা ধরে রেখে একটি শক্তিশালী সামাজিক ও রাজনৈতিক ব্যবস্থা গঠন করতে হবে।
শহীদদের আত্মত্যাগ ও গাজীদের সেক্রিফাইস
ডাকসু ভিপি আরও বলেন, "শহীদরা যে জন্য জীবন দিয়েছে, আমরা সেই ভিত্তিতেই নতুন বাংলাদেশ পেয়েছি।"
তার ভাষায়, গাজী বা শহীদদের ত্যাগের মর্যাদা শুধু স্মরণীয় নয়, বরং দেশের রাজনীতি ও প্রশাসনের নৈতিক কাঠামো গঠনের মূল ভিত্তি। এই ত্যাগকে ব্যবসা ও স্বার্থপর কার্যক্রমের জন্য ব্যবহার করা নৈতিকভাবে অনুচিত।
ছাত্রসমাজে বার্তা ও প্রভাব
ভিপি সাদিক কায়েমের বক্তব্য মূলত ছাত্রসমাজকে সতর্ক ও সক্রিয় রাখার জন্য। তার বক্তব্যে তিনটি মূল বার্তা ফুটে ওঠে:
-
মুক্তিযুদ্ধের মর্যাদা রক্ষা করা সকলের দায়িত্ব।
-
রাজনৈতিক স্বার্থে শহীদদের ইতিহাস ব্যবহার করা যাবে না।
-
নতুন বাংলাদেশ গঠনে নৈতিক ও ইনসাফভিত্তিক রাজনীতি বজায় রাখতে হবে।
শিক্ষার্থীদের কাছে এটি একটি আহ্বান—নিরপেক্ষ ও সতর্ক রাজনীতি পরিচালনা করতে হবে, যা শুধু ব্যক্তিগত স্বার্থ নয়, দেশের জন্য প্রয়োজন।
নতুন বাংলাদেশের নীতি ও দায়িত্ব
ডাকসু ভিপি বলেন, নতুন বাংলাদেশের মূল লক্ষ্য হলো:
-
সমাজে বৈষম্য কমানো
-
শিক্ষার মান বৃদ্ধি
-
স্বাধীন ও ন্যায়বিচারিক রাজনীতি গঠন
-
শহীদদের আত্মত্যাগকে বাণিজ্যের জন্য ব্যবহার থেকে রক্ষা করা
তার মতে, শুধু রাজনৈতিক দায়িত্ব পালন নয়, সামাজিক নৈতিকতা ও জনসচেতনতা বৃদ্ধি করাও নতুন বাংলাদেশের প্রধান লক্ষ্য।
ডাকসু সংবর্ধনা-২৫ অনুষ্ঠান
এই বক্তব্য তিনি দিয়েছেন ৭ নভেম্বর বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী সম্মেলন কেন্দ্রে, ইসলামী ছাত্রশিবিরের আয়োজিত কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ নির্বাচিত প্রতিনিধি সংবর্ধনা-২৫ অনুষ্ঠানে।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছাত্র নেতারা সাদিক কায়েমের বক্তব্যকে সমর্থন জানিয়েছেন এবং নতুন বাংলাদেশ গঠনে সক্রিয় ভূমিকা রাখার জন্য প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হয়েছেন।
চূড়ান্ত বার্তা
নতুন বাংলাদেশে মুক্তিযুদ্ধের ব্যবসা এবং স্বার্থপর রাজনৈতিক ফ্রেমিং কোনো অবস্থাতেই স্থান পাবে না। শহীদদের আত্মত্যাগ ও গাজীদের সেক্রিফাইসের সম্মান রক্ষা করে ছাত্রসমাজ ও রাজনৈতিক নেতাদের সতর্ক ও নৈতিকভাবে দায়িত্ব পালন করতে হবে।
ডাকসু ভিপি সাদিক কায়েমের এই স্পষ্ট বার্তা তরুণ প্রজন্মকে একটি নৈতিক ও দায়িত্বশীল রাজনীতির দিকে পথপ্রদর্শক হিসেবে কাজ করবে।
