মুক্তিযোদ্ধার একটি জাল সনদের জন্য ৫০ হাজার আর সেই সনদের বিপরীতে সারা বছর ভাতা চালুর জন্য আরও এক লাখ টাকা নিয়েছেন আনোয়ার হোসেন নামে এক ডেপুটি কমান্ডার।
তিনি জাল করেছেন প্রধানমন্ত্রী এবং মুক্তিযোদ্ধা সংসদ কেন্দ্রীয় কমান্ড কাউন্সিলের সাবেক চেয়ারম্যানের সই। রাজশাহীর বাঘাতে এমন চারটি ঘটনা শনাক্ত করে আদালতে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিয়েছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)।
তালিকা থেকে বাদ পড়া মুক্তিযোদ্ধা আয়নাল শেখ জানান, ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেওয়ার জন্য মুর্শিদাবাদ জেলার কড়ইগাছি ইয়ুথ ক্যাম্পে প্রশিক্ষণে অংশ নেন বাঘার মুক্তিযোদ্ধারা। তারা যুদ্ধে অংশ নেওয়ার আগেই দেশ স্বাধীন হয়। ২০১৩ সালের পর মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে অন্তর্ভুক্ত হয়ে ভাতা পাচ্ছিলেন তারা। পরে প্রশিক্ষণ নেওয়া নয় জন মুক্তিযোদ্ধা তালিকা থেকে বাদ পড়েন।
তালিকা থেকে বাদ পড়া মুক্তিযোদ্ধা রশিদ বেপারী জানান, বাদ পড়ারা বাঘার মুক্তিযোদ্ধা সংসদের ডেপুটি কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা আনোয়ার হোসেনকে বিষয়টি জানান। এ সময় তিনি এই সনদ তৈরিতে ৫০ হাজার এবং ভাতা চালু করতে এক লাখ টাকা করে চান। সনদও তৈরি করে দেন তিনি।
পিবিআই প্রধান বনজ কুমার মজুমদার জানিয়েছেন, দীর্ঘদিন পর্যন্ত তাঁরা ভাতা না পেয়ে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ে যোগাযোগ করে জানতে পারেন, তাঁদের যে সনদ দেওয়া হয়েছে, সেটি ভুয়া।
বনজ কুমার মজুমদার আরও জানান, এ সংক্রান্ত চারটি মামলার তদন্ত শেষে গত মার্চে পিবিআই আদালতে প্রতিবেদন দেয়। সব মামলাতেই অভিযুক্ত করা হয় আনোয়ার হোসেনকে। প্রধানমন্ত্রীর সই জাল করা ও টাকা লেনদেনের অভিযোগের সত্যতাও পায় পুলিশ।
এ ব্যাপারে কথা বলতে অভিযুক্ত আনোয়ার হোসেনের বাড়িতে গিয়ে বা ফোন করেও তার হদিস পাওয়া যায়নি।
এর আগে, ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা সনদ দিয়ে অর্থ হাতিয়ে নেওয়ার বিষয়টি মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ও তদন্ত করে এর সত্যতা পায়।