বীর নিবাস’ নির্মাণে দফায় দফায় চাঁদা!কাপাসিয়ায় অসচ্ছল বীর মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য সরকারি উদ্যোগে ‘বীর নিবাস’ নির্মাণে চাঁদাবাজির ঘটনা ঘটেছে। জানা গেছে, এক বীর মুক্তিযোদ্ধাকে দফায় দফায় চাঁদা দিতে হচ্ছে। উপজেলার রায়েদ ইউনিয়নের মাহতাবপুর গ্রামের ঐ বীর মুক্তিযোদ্ধা এবং সংশ্লিষ্ট ঠিকাদার চাঁদাবাজের হাত থেকে রেহাই পাননি। ভুক্তভোগী বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. কামালউদ্দিন ওরফে সুরুজ মিয়া জানান, ছেলে-মেয়েদের নিয়ে গ্রামের বাড়িতে থাকার বসতঘরের মারাত্মক সংকট হওয়ায় তিনি অনেক দেন দরবার করে ঐ প্রকল্পের অধীনে একটি ঘরের বরাদ্দ পান। তার বাড়িটি রায়েদ বাজার থেকে দরদরিয়াগামী পাকা রাস্তার একটু ভিতরে হওয়ায় ঠিকাদারের লোকজন সরাসরি নির্মাণসামগ্রী বহন করতে পারছিল না। নির্মাণসামগ্রী গন্তব্যে পৌঁছাতে সড়কের পাশে জনৈক মোশারফ হোসেনের জমি অতিক্রম করতে হয়। মোশারফ তার জমির ক্ষতির কারণ দেখিয়ে নির্মাণসামগ্রীবাহী পরিবহনে সব ধরনের যানবাহন যেতে বাধা দেন।
আরও পড়ুন ঃবীর মুক্তিযোদ্ধা খ ও গ তালিকা আপীল
এক পর্যায়ে মোশারফ হোসেন তার জমির ওপর দিয়ে মালামাল পরিবহনে কামালউদ্দিনের কাছে ২ লাখ টাকা দাবি করেন। বিষয়টি তিনি রায়েদ ইউপি চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ সভাপতি শফিকুল হাকিম (হিরন) মোল্লাকে অবহিত করলে কয়েক দিন পর তিনি ২০ হাজার টাকায় রফা করে সাময়িক সমাধান করে দেন। কিন্তু ঠিকাদারের লোকজন মালামাল নিতে গেলে মোশারফ ফের বাধা দিয়ে তার মাধ্যমে মালামাল ক্রয় ও সরবরাহ করতে হবে বলে শর্ত দেন। একের পর এক সংকট তৈরি করায় নিরুপায় হয়ে ঠিকাদারের লোকজন তার মাধ্যমে ইট ও বালু ক্রয় ও সরবরাহ করতে রাজি হয়। এ সুযোগে মোশারফ হোসেন ঠিকাদারের কাছ থেকে প্রায় ২০ হাজার টাকা অতিরিক্ত আদায় করেন। ফের ছাদ ঢালাইয়ের সময় রড সিমেন্ট পরিবহনে বাধা দিয়ে আরও ১০ হাজার টাকা আদায় করেন। তাছাড়াও বিভিন্ন সময় কামালউদ্দিনের কাছ থেকে ধার হিসেবে ১ হাজার/২ হাজার টাকা করে আনুমানিক ৭-৮ হাজার টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন।
এ বিষয়ে ঠিকাদার মো. আনোয়ার হোসেন জানান, বীর মুক্তিযোদ্ধা কামালউদ্দিনের জন্য বরাদ্দকৃত বাড়ি নির্মাণের কাজ ছয় মাস শুরু করা থেকে এ পর্যন্ত নানা সংকট মোকাবিলা করে চলছেন।
কামালউদ্দিন জানান, মোশারফ নানান অজুহাতে দফায় দফায় তার কাছ থেকে প্রায় ৬০ হাজার টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। অভিযুক্ত মো. মোশারফ হোসেন জানান, কামালউদ্দিনের বাড়ি নির্মাণ করতে গিয়ে নিজ জমির বেশকিছু ক্ষয়ক্ষতি বাবদ রায়েদ ইউপি চেয়ারম্যান হিরন মোল্লা ও সদস্য আফাজউদ্দিনের কাছ থেকে কিছু টাকা পেয়েছেন। তবে তিনি মোট কত টাকা নিয়েছেন সে জবাব এ প্রতিবেদকের কাছে দিতে ইচ্ছুক নন।এ বিষয়ে রায়েদ ইউনিয়নের ৭ নম্বর সদস্য মো. আফাজউদ্দিন চাঁদার বিষয়টির সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, কামালউদ্দিনের বাড়িতে যেহেতু যাওয়ার কোনো রাস্তা নেই, তাই তার কাছ থেকে কিছু টাকা আদায় করে মোশারফের উঠানের জমি ব্যবহার করায় ঐ টাকা তাকে দিতে হয়েছে।
চেয়ারম্যান শফিকুল হাকিম (হিরন) মোল্লা জানান, কামালউদ্দিনের কাছ থেকে টাকা নিয়ে আফাজউদ্দিন মেম্বারের মাধ্যমে মোশারফের উঠান দিয়ে মালামাল পরিবহনের ক্ষতিপূরণ বাবদ ১০ হাজার টাকা দিয়েছেন। পরবর্তী সময়ে মোশারফের বাধার কারণে আরও টাকা নিয়ে থাকতে পারে।