নির্বাচন–গণভোট একই দিনে: প্রধান উপদেষ্টার ঘোষণায় নিশ্চিন্ত গণঅধিকার পরিষদ

 প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের ভাষণের পর ফেব্রুয়ারির জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে আর কোনো ধোঁয়াশা নেই বলে মন্তব্য করেছেন গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নুর। তিনি বলেন, নির্বাচন ও গণভোট একই দিনে আয়োজনের বিষয়টি রাজনৈতিক অনিশ্চয়তা দূর করবে। জুলাই সনদ বাস্তবায়ন ও নির্বাচনকে সামনে রেখে বিভিন্ন রাজনৈতিক মতভেদ তৈরি হলেও প্রধান উপদেষ্টার স্পষ্ট রূপরেখায় সেই বিভাজন অনেকটাই কমে এসেছে। নুর মনে করেন, এখন সব রাজনৈতিক দলের উচিত নির্বাচনের পরিবেশ স্বাভাবিক রাখতে সরকারকে সহযোগিতা করা। 

 

নির্বাচন–গণভোট একই দিনে: প্রধান উপদেষ্টার ঘোষণায় নিশ্চিন্ত গণঅধিকার পরিষদ


  

আগামী ফেব্রুয়ারিতে অনুষ্ঠিত হবে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন। বেশ কিছুদিন ধরে নির্বাচন ঘিরে নানা রাজনৈতিক অনিশ্চয়তা বিরাজ করছিল। জুলাই সনদ বাস্তবায়ন, গণভোট প্রশ্ন, রাজনৈতিক দলগুলোর ভিন্নমত—সব মিলিয়ে জাতীয় নির্বাচন নিয়ে সাধারণ মানুষের মধ্যেও ছিল ধোঁয়াশা।

এই পরিস্থিতিতে বৃহস্পতিবার জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস ঘোষণা দেন—
➡️ জাতীয় নির্বাচন ও গণভোট একই দিনে অনুষ্ঠিত হবে।
এই ঘোষণার পর নির্বাচনের সম্ভাব্য অনিশ্চয়তা অনেকটাই দূর হয়েছে বলে মত দিয়েছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।

🔶 নুরুল হক নুরের সরকারি ঘোষণাকে স্বাগত

শুক্রবার (১৪ নভেম্বর) সকালে রাজধানীর বিজয়নগরে আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া জানাতে এসে গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নুর বলেন—
“প্রধান উপদেষ্টার ঘোষণার পর ফেব্রুয়ারির নির্বাচন নিয়ে আর কোনো ধোঁয়াশা নেই। আমরা নির্বাচন–গণভোট একই দিনে করার উদ্যোগকে স্বাগত জানাই।”

তিনি ব্যাখ্যা করেন,
জাতীয় নির্বাচন সামনে রেখে জুলাই সনদ বাস্তবায়ন কেমন হবে—এ নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে মতভেদ দেখা দিয়েছিল। এর ফলে নির্বাচন নিয়ে সন্দেহ, প্রশ্ন এবং বিভক্তি তৈরি হচ্ছিল। তবে প্রধান উপদেষ্টার সরাসরি অবস্থান স্পষ্ট করায় এখন সংশয় অনেকটাই কেটে গেছে। 

আরও পড়ুন নির্বাচনের সঙ্গে একই দিনে গণভোট: প্রধান উপদেষ্টা

🔶 জুলাই সনদ নিয়ে বিভাজন কিভাবে কমে এলো

জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের পর গঠিত অন্তর্বর্তী সরকারের মূল লক্ষ্য ছিল—

  • গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার

  • নির্বাচনকে অংশগ্রহণমূলক করা

  • রাজনৈতিক সহিংসতা কমানো

  • জনগণকে সিদ্ধান্ত নেওয়ার সুযোগ দেওয়া

কিন্তু জুলাই সনদের কিছু বিষয়—বিশেষ করে গণভোট কিভাবে হবে, জুলাই সনদের কোন অংশ কার্যকর হবে—তা নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলো বিভিন্ন ব্যাখ্যা দিয়েছে। এ অবস্থায় জাতীয় নির্বাচন নিয়ে প্রশ্ন তৈরি হচ্ছিল।

নুর বলেন—
“ভাষণে যে রূপরেখা দেওয়া হয়েছে, তা বাস্তবায়নযোগ্য এবং রাজনীতিকে সঠিক পথে নিয়ে আসবে।”

🔶 রাজনৈতিক দলগুলোকে সহযোগিতার আহ্বান

গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি মনে করেন—এখন সময় রাজনৈতিক টানাপোড়েন বন্ধ করে নির্বাচনী পরিবেশকে সহায়ক করা। তিনি বলেন—
“প্রধান উপদেষ্টার ঘোষণার পর রাজনৈতিক দলগুলোর উচিত নির্বাচনকে সফল করার জন্য আন্তরিক সহায়তা করা। রাজনৈতিক প্রতিহিংসা নয়, এখন প্রয়োজন রাষ্ট্রের স্বার্থে একসঙ্গে কাজ করা।”

তিনি আরও যোগ করেন—
নির্বাচনের বিশ্বাসযোগ্যতা, নিরাপত্তা, লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড—সবকিছু নিশ্চিত করতে সরকারকে সহায়তা করা প্রত্যেক রাজনৈতিক দলের দায়বদ্ধতা। 

আরও পড়ুন জুলাই সনদের পথে এগোচ্ছে এনসিপি

🔶 নির্বাচন–গণভোট একই দিনে: সুবিধা কী?

প্রধান উপদেষ্টার ঘোষণায় নির্বাচন–গণভোট একই দিনে করার তিনটি বড় সুবিধার কথা উল্লেখ করা হয়—

1️⃣ ব্যয় কমবে

আলাদা দুটি দিনে ভোট আয়োজন করলে খরচ দ্বিগুণ হয়। একই দিনে করলে বাজেট কমবে।

2️⃣ নিরাপত্তা সহজ হবে

যতদিন ভোট হয়, ততদিন উত্তেজনা থাকে। একই দিনে ভোট হলে নিরাপত্তা ঝুঁকি কমে যায়।

3️⃣ জনগণের অংশগ্রহণ বাড়বে

একদিনেই তারা সংসদ নির্বাচন ও গণভোটে মতামত দিতে পারবেন—রাজনৈতিকভাবে এটি শক্ত ভিত্তি তৈরি করবে।

🔶 গণঅধিকার পরিষদ নির্বাচনের পক্ষে

দলটি সবসময়ই অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের পক্ষপাতী। নুর বলেন—
“গণঅধিকার পরিষদ স্বচ্ছ ও অন্তর্ভুক্তিমূলক নির্বাচনে বিশ্বাস করে। আমরা চাই জনগণের মতামত প্রতিফলিত হোক।”

দলের অন্যান্য নেতারা মনে করেন,
নির্বাচন সুষ্ঠু হলে দেশের রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা ফিরবে, অর্থনীতি চাঙা হবে এবং জনগণের আস্থা ফেরত আসবে।

নবীনতর পূর্বতন

যোগাযোগ ফর্ম